Skip to main content

নামাজ প্রসঙ্গে - পুরো অধ্যায়

প্রশ্ন আছে ৯৬ টি - দলিল সহ 


০১ প্রশ্ন: সেজদার জায়গায় ধুলা-বালি থাকলে নামাজের মধ্যে ফুঁ’দিয়ে তা দূর করা শরীয়তের দৃষ্টিতে কেমন? 
উত্তর: সেজদার জায়গায় ধুলাবালি থাকলে যদি তা ফুঁ দিয়ে দূর করার কারণে আওয়াজ সৃষ্টি হয় তাহলে নামাজ-নষ্ট হয়ে জাবে,অন্যথায় নামাজ নষ্ট হবে না,তবে-ইচ্ছাকৃত এরূপ করা মাকরূহ।আর যদি সেজদার জায়গায় কষ্টদায়ক কোন কিছু থাকে যার কারণে সেজদা করতে অক্ষম হয় তখন তা হাত দিয়ে সরিয়ে দিবে।
(হিন্দীয়া ১/১৫৯, ক্বাযীখান ১/৭৪)

০২ প্রশ্ন: মহিলারা বৈঠকের সময় কিভাবে বসবে, পুরুষদের মতই-নাকি তাদের থেকে ভিন্ন কোন পদ্ধতিতে ?
উত্তর: মহিলারা বৈঠকের সময় পুরুষদের মত বসবেনা,বরং সে তার বাম নিতম্বের উপর বসবে এবং তার উভয়-পা ডান দিকে বের করে দিবে। ( হিন্দীয়া ১/১৩৩, রাহিমীয়া ৫/৭৫)

০৩ প্রশ্ন:নামাজে কেউ দুইবার সূ্রা ফাতেহা পড়ে ফেলে তাহলে তার উপর সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে কি না?
উত্তর: কোন ব্যক্তি যদি ফরজ নামাজের প্রথম দুই রাকাআতে ও ওয়াজিব, সুন্নাত ও নফল নামাজের প্রত্যেক রাকাআতে সূ্রা মিলানোর পূর্বে দুইবার সূ্রা ফাতেহা পড়ে তাহলে তার উপর সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে।আর যদি সূ্রা মিলানোর পরে দ্বিতীয়বার পড়ে অথবা ফরজ নামাজের শেষ দুই রাকাআতে সূ্রা ফাতেহা দুইবার পড়ে তাহলে তার উপর সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে না। 
(হিন্দীয়া ১/১৮৫, ফাতহুল কাদীর ১/৫২০, রাহিমীয়া ৫/১৮৩)

০৪ প্রশ্ন: নামাজে আরবীতে অথবা বাংলায় নিয়ত করা শরিয়তের দৃষ্টিতে কেমন?

উত্তর: নিয়ত হচ্ছে আন্তরিক ইচ্ছা। মুখে নিয়ত বলা শর্ত না। কিন্তু উত্তম, আর অন্তরের ইচ্ছা যে ভাষাই হোক না কেন যথা আরবি, বাংলা ইত্যাদি তা যথেষ্ট হবে। (শামী ২/১১১, হিন্দীয়া ১/১২৩)

০৫ প্রশ্ন: জোহরের নামাজের ২য় রাকাআতে থাকা অবস্থায় আমার পাশে এক ব্যক্তি টাখনুর নিচে কাপড় রেখেই জামাআতে শরীক হওয়ার ইচ্ছা করে।আমি তাকে কাপড় উঠানের জন্য সতর্ক করতে কাশি দেই। পরের দিন ইমাম সাহেব জানান, নামাজে অযথা কাশি দিলে নামাজ ভেঙে যায়। আমার জানার বিষয় হল উক্ত কাশি দ্বারা আমার নামাজ নষ্ট হয়ে গেছে কি ?

উত্তর: ওজর ব্যতীত নামাজে কাশির দ্বারা নামাজ নষ্ট হয়ে যায়। সুতরাং আপনার নামাজ নষ্ট হয়ে গিয়েছে।এখন তা কাযা করা জরুরি । (শামী ২/২১৬, হিন্দীয়া ১/১৫৯, হাক্কানিয়া ৩/২১৮)
০৬ প্রশ্ন: জানাজা নামাজ অথবা সেজদা তেলাওয়াতের মধ্যে যদি কেউ অট্টহাসি দেয় তবে কি তার অজু ভেঙে যাবে?
উত্তর: না। কোন ব্যক্তি যদি জানাজা নামাজ অথবা সেজদায়ে তেলাওয়াতের মধ্যে অট্টহাসি দেয় তাহলে তার অজু ভাঙবে না। (শামী ১/৩০০, শামী ১/১৩৬, দারুল উলূম ১/১৬৮)

০৭ প্রশ্ন: তিনবার তাকবীরে  তাশরিক বলার বিধান কি ?

উত্তর :প্রতি নামাযের  পর তাকবীরে তাশরীক একবার বলা ওয়াজিব। এর চেয়ে বেশি বলা সুন্নাত পরিপন্থী। (শামী ৩/৭১, হিন্দীয়া ১/১৫৬, দারুল উলূম ৫/২০৩)

০৮ প্রশ্ন: আমি শুনেছি যে, সুন্নাত নামাযের কাযা নেই। ওজর বশতঃ কোন সময় সুন্নত নামাজ ছুটে গেলে তা ২য় বার আদায় করতে হয় না। আগের-সুন্নাত নামায আদায় করতে না পারলে তা পরে পড়ে নিবে, মাসআলাটা কি সঠিক ? এবং তা কখন আদায় করতে হবে। 

উত্তর: উক্ত আলেমের কথাটি মৌলিক ভাবে সঠিক। এক্ষেত্রে মাসয়ালাটি হল, ফজরের সুন্নাত যদি ফরজ সহকারে-ছুতে যায় তাহলে তা সূর্য হেলে যাওয়ার পূর্বে পড়ে নিবে। আর যদি শুধু সুন্নাত ছুটে যায় তাহলে সেটাকে সূর্য উদিত হওয়ার পূর্বে ক্বাযা করবে না। এবং পরেও করবে না। আর যদি জোহরের পূর্বের চার রাকাআত সুন্নাত ছুটে যায় তাহলে- তা জোহরের নামাযের পর দুই রাকাআত সুন্নাতের পর আদায় করবে।
(শামী ২/৬১৯, ফাতহুল কাদীর ১/৩৯২-৩৯৮, হাক্কানিয়া ৩/২৯৭)

০৯ প্রশ্ন: আমি যখন নামায আদায় করি তখন আমার ছোট ছেলে মেয়েরা আমার জায় নামাযে এসে ভিড় করে। যখন সিজদাতে যাই তখন আমার পিঠে চড়ে বসে এবং গলায় ধরে ঝুলে থাকে। তাদের শরীরে নাপাক থাকা এভাবে তাদের নিয়ে নামায আদায় করলে আমার নামায সহিহ হবে কি ?

উত্তর: ছোট ছেলে, মেয়েরা যদি নাপাক শরীর বা কাপড় নিয়ে নিজেই আপনার পিঠে অথবা গলা ধরে ঝুলে থাকে তবে আপনার নামায সহীহ হয়ে যাবে। যদিও তা দীর্ঘ সময় হয়।
(হিন্দীয়া ১/১২০, ফাতহুল ক্বাদীর ১/২০৪)

১০ প্রশ্ন: নামাযের মধ্যে মহিলাদের সমস্ত চুল ঢেকে রাখা আবশ্যক, না কি মাথা ঢাকলেই 
চলবে ?

উত্তর: নামাযের মধ্যে মহিলাদের সমস্ত চুল ঢেকে রাখা আবশ্যক। শুধু মাথা ঢেকে নামায আদায় করলে নামায সহীহ হবে না। (শামী ২/৭৫-৭৭, হিন্দীয়া ১/৫৮, হাক্কানিয়া ৩/২২৭)

১১ প্রশ্ন: একদিন আসরের নামাযে তৃতীয় রাকাতে ইমাম সাহেব তিনটি সিজদা করেন। কিছু মুক্তাদি তার অনুস্মরণ করেছে আর কিছু মুক্তাদী অনুস্বরন করে নি। ইমাম সাহেব নামায শেষে। সিজদা সাহু করেন নি। এখন নামাযের হুকুম কি ?

উত্তর: প্রশ্নে উল্লিখিত বিবরণ অনুযায়ী নামাযকে পুনরায় পড়া অয়াজিব।
(শামী ২/৫৪৩, হিন্দীয়া ১/১৮৫, ফাতহুল আহসান ৪/৪০)

১২ প্রশ্ন: মহিলাদের মসজিদে এসে জামাতের সাথে ঈদের নামায, জুমার নামায, তারাবীর নামায পড়ার বিধান কি ?

উত্তর: মহিলাদের মসজিদে জামাতের সাথে জুমা ও ঈদের নামায পড়া ওয়াজিব নয়। এবং মহিলাদের জামাতে জুমা, ঈদ ও তারাবীর নামাযে উপস্থিত হওয়া মাকরুহ। যেহেতু এতে অনাক ফেৎনার আশংকা থাকে। (শামী ২-৩/২৮-৪৫-৩০৫-৩০৭, হাক্কানীয়া ৩/৩৮৬)

১৩ প্রশ্ন: নামাযে মাহিলাদের সতর কতটুকু অর্থাৎ কোন কোন অঙ্গঢেকে রাখতে হবে আর কোন কোন অঙ্গপ্রকাশ করতে পারবে।

উত্তর: নামাযে স্বাধীন মহিলার সমস্ত শরীর সতর। তবে চেহারা, হাতের তালু এবং পাবেতীত।
(শামী ২/৭৮-৭৯, ফালাহ ২৪১-২৪২)

১৪ প্রশ্ন: শহিদের রক্ত কি পাক এর্থাৎ রনাঙ্গনে আমার পাশের কোন ভাই যদি শহিদ হয়ে যান এবং তার যখমার রক্ত আমার শরীরে অথবা কাপড়ে লাগে তাহলে এ রক্ত সহ আমি নামায আদায় করতে পারব কি ?

উত্তর: শহিদের রক্ত যতক্ষন তার শরীরে থাকবে ততক্ষন পর্যন্ত পাক। শহিদের রক্ত আপনার কাপড় কিংবা শরীর লাগার কারণে রক্ত সহ আপনি নামায আদায় করতে পারবেন না। কারন শহিদের রক্ত তার শরীর হতে পৃথক হয়ে যাওয়ার পর নাপাক হয়ে যায়। (হিন্দীয়া ১/১২০, ফাতহুল কাদীর ১/২০৪)

১৫ প্রশ্ন: লম্বা কার্পেট যার এক প্রান্ত নাপাক অপর প্রান্ত পাক। এর পাক অংশে নামায পড়া যায়েজ আছে  কি ?

উত্তর: যে লম্বা কার্পেটের এক প্রান্ত নাপাক অপর প্রান্ত পাক। তাহলে তার পাক অংশে নামায পড়লে নামায যায়েজ, চাই কার্পেট ছোট হোক। (বাদায়উসনায়ে ১/২৩৮, ফাতহুল কাদীর ১/১৯৩)

১৬ প্রশ্ন: আমি জোহর নামাজে মাসবুক হই ইমাম সাহেব যখন সালাম ফিরান তখন তার সালামের পরে আমি ডান দিকে সালাম ফিরিয়ে ফেলি প্রতক্ষনে আমার স্বরন হয় যে আমি মাসবুক হয়েছি। এরপার আমি দাড়য়ে ছুটে যাওয়া রাকাত আদায় করি। এমতাবস্থায় আমাকে কি সাহু সেজদা আদায়ের সাথে নামায সম্পন্ন করতে হবে ?

উত্তর: ইমামের পরে সালাম ফিরানোর কারণে সাহু সেজদা সহ আপনার নামায সম্পন্ন করতে হবে। 
(হিন্দীয়া ১/৯১, শামী ১/৫৯৯)

১৭ প্রশ্ন: আমার এক ঘনিস্ট বন্ধু মারা গেছেন। তার জানাজায় শারিক হওয়ার খুব ইচ্ছা ছিল। কিন্তু আমার আসতে দেরি হয়ে যায়। এসে দেখি জানাজা শুরু হয়ে গেছে তড়িঘড়ি তায়ামুম করে জানাজায় শরিক হই। তবে একটু দুরে পানি ছিল। অজু করতে গেলে জানাজা ছুটে যেতে। এখন জানার বিষয় হল এভাবে পানি থাকা অবস্থায় শুধু জানাজা ছুটে যাওয়ার ভয়ে তায়াম্মুম করে জানাজার নামাজ পড়াতে আমার নামায ছহীহ হয়েছে কি ? জানালে কৃতঙ্গ থাকব।

উত্তর: জানাজা ছুটে যাওয়ার ভয়ে নিকটে পানি থাকা সত্বেও তায়াম্মুম করে জানাজার নামায পড়ায় আপনার জানাজার নামায ছহীহ হয়ে গেছে । (শামী ১/২৪১, আহসানুল ফাতুয়া ২/৫৯)

১৮ প্রশ্ন: আমরা দেখি যে আমাদের সমাজে কোন কোন ইমাম সাহেব জানাজার নামাজের পরে দোয়া করেন। আমার জানার বিষয় কলো, জানাজার নামাজের পরে দোয়া করা জায়েজ আছে কিনা ? সঠিক মাসালা জানিয়ে উপকৃত করবেন।

উত্তর: জানাজার নামাজের পরে দোয়া করা জায়েজ নাই।(শামী ৩/১০৬, ক্বাযীখান ১/১২১, মাহমুদীয়া ১৩/১৮৫)

১৯ প্রশ্ন: বিনীত নিবেদন এইযে, নামাজে কেউ যদি আরবীতে কথা বলে এমনকি কুরআন-হাদীসের আলফাজ কে কথার মধ্যে ব্যবহার করে তাহলে তার নামাজের হুকুম কি ?

উত্তর: নামাজে কেউ যদি কথা বলে তাহলে তার নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে, চাইতা যে কোন ভাষায় হোক। এমনকি কথার মধ্যে কুরআন-হাদীসের কোন শব্দকে ও যদি নামাজের মধ্যে ব্যবহার করে তাহলেও নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। (বাহরুর রায়েক ২/৩, শামী ২/৪৪৫)

২০ প্রশ্ন: আমি ভুলে প্রথম রাকাতে সূরা নাস পড়ে ফেলি। দ্বিতীয় রাকাতে আমার করনীয় কি ? এর আগের কোন সূরা পড়বো, নাকি আবার সূরা নাস পড়বো, নাকি আবার সূরা নাস পড়বো ? উভয়টিইতো মাকরুহ জানালে উপকৃত হব।

উত্তর: প্রশ্ন উল্লিখিত অবস্থায় দ্বিতীয় রাকাতে আপনি পুনরায় সূরা নাস পড়বেন।
(শামী ২/৩২৯, ফাতহুল কাদীর ১/৩৫২)

২১ প্রশ্ন: আমি জানি যে, তাকবীরে তাহরীমা বলা ফরজ, মাগরিবের নামাজে যখন মসজিদে উপস্থিত হই তখন দেখি ইমাম সাহেব রুকুতে। দ্রুত রুকুতে শরীক হই এবং রুকু অবস্থায় তাকবীরে তাহরীমার নিয়তে আল্লাহু আকবার বলি। বিষয়টি আমার এক আলেম বন্ধুর সাথে আলোচনা করলে তিনি বলেন তাহরীমার তাকবীর দাঁড়ানো অবস্থায় বলা জরুরী। রুকুতে গিয়ে তাকবীরে তাহরীমা বললে নামাজ সহীহ হবে না। আমার বন্ধুর কথা কি ঠিক ? আমার কি আবার নামাজ পড়তে হবে ?

উত্তর: হ্যা, আপনার বন্ধুর কথা সঠিক। রুকুতে গিয়ে তাকবীরে তাহবীমা বললে নামাজ সহীহ হবে না। বরং দাড়ানো অবস্থায় তাকবীরে তাহরীমা বলা জরুরি তাই আপনাকে পুনরায় আবার উক্ত নামাজ পড়তে হবে।
(ফাতহুল কাদীর ১/২৮৪, ক্বাযীখান ১/৫৬)

২২ প্রশ্ন: যদি কোন ব্যাক্তি তাশাহুদের জায়গায় সূরা ফাতেহা পড়ে ফেলে কিংবা সূরা ফাতেহার জায়গায় অথবা পূর্বে তাশাহুদ পড়ে ফেলে তাহলে তার উপর সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে কি না ?

উত্তর: যদি কেউ তাশাহুদের জায়গায় সূরা ফায়েহা পড়ে ফেলে অথবা সূরা ফাতেহার জায়গায় তাশাহুদ পড়ে ফেলে তাহলে উভয় অবস্থায় তার উপর সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে। তবে যদি সূরা ফাতেহার পূর্বে তাশাহুদ পড়ে তাহলে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে না। (হিন্দীয়া ১/১৭৬-১৭৮, রাহিমীয়া ৫/১৮৪, ক্বাযীখান ১/৮৮)

২৩ প্রশ্ন: যে রুমে ছবি টানানো আছে সেখানে নামাজ আদায় করা শরীয়তের দৃষ্টিতে কেমন ?

উত্তর: যে রুমে ছবি টানানো আছে সেখানে নামাজ আদায় করা শরীয়তের দৃষ্টিতে মাকরুহ। তবে যদি ছবিটি ছোট হওয়ার কারণে দৃষ্টি গোচর না হয় তাহলে নামাজের কোন ক্ষতি হবে না।
(হিন্দীয়া ১/৬৬, ক্বাযীখান ১/৭৫)

২৪ প্রশ্ন: মুকতাদী এক অথবা দুই জন থাকা অবস্থায় প্রশস্ত জায়গার মধ্যে ইমাম সাহেব কোথায় দাঁড়াবে ?

উত্তর: মুকতাদী একজন হলে ইমামের ডান পাশে দাড়াবে এবং ইমাম বাম পাশে দাড়াবে, আর দুই জন হলে পিছনে দাঁড়াবে এবং ইমাম সামনে দাড়াবে। (বাদায়উসনায়ে ১/৩৯১, হিন্দীয়া ১/৮৮) 

২৫ প্রশ্ন: নামাজের জন্য জায়গা পাক হওয়া শর্ত যদি এমন হয় যে সিজদাতে হাটু এবং চেহারা রাখার মাঝের কিছু জায়গা নাপাক হয়, তবে নামাজ হবে কি ?

উত্তর: সিজদাতে হাটু এবং চেহারা রাখার মাঝের জায়গা নাপাক থাকলে নামাজ হয়ে যাবে, সহীহ হতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে না। (বাহরুর বায়েক ১/৪৬৫, শামী ২/৭৫)

২৬ প্রশ্ন: আমি জানি নামাজে কেরাত পড়া ফরজ। আমার জানার বিষয় হলো কেরাত কি মুখে উচ্চারন করে পড়া জরুরী নাকি মনে মনে পড়লে চলবে।

উত্তর: নামাজে ক্বেরাত এমনভাবে মুখে উচ্চারন করে পড়া জরুরী যাতে নিজে শুনতে পায়, কেউ যদি মনে মনে কেরাত পড়ে এমন ভাবে যা সে শুনে না তাহলে তার কেরাতের ফরজিয়্যাত আদায় হবে না।
(হিন্দীয়া ১/১৬৭, মাহমুদীয়া ১০/৪৫৫, শামী ২/২৫২-২৫৩)

২৭ প্রশ্ন: পাঞ্জাবীর হাতা গোতানো অবস্থায় অথবা হাফ হাতা ওয়ালা শাট কিংবা গেঞ্জি গায় দিয়ে নামাজ আদায় করলে কি নামাজ মাকরুহ হবে ?

উত্তর: পাঞ্জাবীর হাতা গোতানো অবস্থায় অথবা হাফ হাতা ওয়ালা শাট কিংবা গেঞ্জি গায় দিয়ে নামাজ আদায় করা মাকরুহ। (হিন্দীয়া ১/১৬৫, শামী ২/৪০৬, মাহমুদীয়া ১১/৯৯)

২৮ প্রশ্ন: নামাজির সামনে দিয়ে অতিক্রম করার জন্য সুতরা কেমন হতে হবে ?

উত্তর: নামাজির সামনে দিয়ে অতিক্রম করার জন্য সুতরা এক হাত বা তার চায়ে লম্বা হতে হবে এবং আংগুলের ন্যায় মোটা হতে হবে। (সহিহ মুসলিম ১/১৯৫, হিন্দীয়া ১/১৬৩)

২৯ প্রশ্ন: জুমার দিন ফজরের নামাজে সূরা আলিফ লাম মীম সেজদাহ ও সূরা দাহর পড়ার বিধান কি ?

উত্তর: জুমার দিন ফজরের নামাজে সূরা আলিফ লাম মীম সেজদাহ ও সূরা দাহর পড়া মুস্তাহাব।
(তাতারখানিয়া ২/৭১, ফাতহুল কাদীর ১/৩৪৪, তিরমিজি ১/১১৭)

৩০ প্রশ্ন: মসজিদে একা, এক কাতারে নামাজ পড়ার হুকুম কি ?

উত্তর: সামনের কাতারে জায়গা থাকা স্বওেও পিছনের কাতারে একা নামাজ পড়া মাকরুহ। আর যদি সামনের কাতারে জায়গা না থাকে তাহলে মাকরুহ নয়। তবে এ ক্ষেত্রে উওম হলো সামনের কাতার থেকে মাসআলা জানে এমন কোন ব্যক্তিকে নিজের সাথে এনে দাড় করানো।
(শামী ২/৩৭৩-৩৭৪, হিন্দীয়া ১/১৬৬, দারূল উলুম ৩/৩৪৫)

৩১ প্রশ্ন: নামাজের মধ্যে যদি সাপমারে তবুও নামাজ হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু যদিতা আমলে কাছীর দ্বারা মারা হয় অথবা কেবলা থেকে সিনা ঘুরে যায় তবে কি নামাজ ছহীহ হবে ?

উত্তর: যদি সাপ আমলে কাছীর দ্বারা মারা হয় তাহলে নামাজ ফাসেদ হয়ে যাবে। ছহীহ হবেনা। এটাই ছহীহ কঊল। (মাবসুত ১/৩৫২, শামী ১/৬৫১, মাহমুদিয়া ১১/৫৪-৫৫)


৩২ প্রশ্ন: একজন ব্যক্তি কখন জামাতে শরিক হলে তাকবীরে উলা পেয়েছে বলা হবে ? অর্থাৎ হাদিসে বর্নিত ফজিলতের অধিকারী হবে কি ?

উত্তর: প্রথম রাকাত পাওয়ার দ্বারা তাকবীরে উলা পেয়েছে বলা হবে। এবং হাদিসে বর্নিত ফজিলতের অধিকারী হবে। (শামী ১/৫২৬, হিন্দীয়া ১/৬৯, মাহমুদীয়া ৯/৩১০)

৩৩ প্রশ্ন: হায়েজ অবস্থায় মহিলারা সিজদার আয়াত শুনলে পবিত্র হওয়ার পর তাদের কি সে সিজদা আদায় করতে হবে কি ?

উত্তর: হায়েজ অবস্থায় মহিলারা সিজদার আয়াত শুনলে পবিত্র হওয়ার পর তাদের কি সে সিজদা আদায় করতে হবে না। কেননা এ অবস্থায় তাদের উপর সিজদা ওয়াজিব হয় না।
(শামী ২/৫৮১, বাদাউসনায়ে ১/৪৩৯-৪৪০, আহসানুল ফাতওয়া ৪/৬০)

৩৪ প্রশ্ন: যদি কোন ব্যক্তি ওয়াক্ত হওয়ার আগে আযান দেয় এবং পরবর্তীতে জানা যায় আযানের ওয়াক্ত হয়ে ছিলনা, তবে তার পুনরায় আজান দিতে হবে কি ?

উত্তর: ওয়াক্ত হওয়ার আগে আজান দিলে পুনরায় আজান দিতে হবে।
(শামী ১/৩৮৫, তাতারখানীয়া ২/১৪৮, রাহিমীয়া ৪/৯৪ )

৩৫ প্রশ্ন: নামাজে এদিক ওদিক তাকানো কিংবা আসমানের দিকে তাকানোর হুকুম কি ?

উত্তর: নামাজের মধ্যে এদিক ওদিক তাকানো কিংবা আসমানের দিকে তাকানো মাকরুহে তানযিহী।
(শামী ২/৪১০, তাতারখানীয়া ২/২০৬)

৩৬ প্রশ্ন: আমি নামাজে তাশাহহুদের কয়েকটি শব্দ ভূলে যাই, এরপর থেকে যা মনেছিল তা’পড়ে তাশাহহুদ শেষ করি, এমতাবস্থায় আমার উপর সিজদায়ে-সাহু ওয়াজিব কিনা ?

উত্তর: এমতাবস্থায় আপনার উপর সিজদায়ে-সাহু ওয়াজিব। (ক্বাযীখান ১/৭৬, ফাতহুল কাদীর ১/৫১৯-৫২০)

৩৭ প্রশ্ন: নামাজে দাড়ানো অবস্থায় দুইহাত নাভির নিচে বাধতে হবে, এটা কি হাদিস দ্বারা প্রমানিত ? দয়া করে হাদিসটি উল্লেখ করে জানাবেন।

উত্তর: নামাজে দাড়ানো অবস্থায় দুইহাত নাভির নিচে বাধতে হবে, এটা হাদিস দ্বারা প্রমানিত। হযরত ওয়ায়েল ইবনে হুজর (রাযিঃ) তার পিতা থেকে বর্ননা করেন, আমি নবী করিম (সাঃ) কে নামাজের মধ্যে নাভীর নিচে ডান হাতকে বাম হাতের উপর রাখতে দেখেছি। মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ৩/৩২০, হাদিস নং – ৩৯৫৯ ।
(বাদায়েউসসনায়ে ১/৪৬৯,ফাতহুল কাদীর ১/২৯১)

৩৮ প্রশ্ন: মুসাফিরের জন্য সুন্নাত বিতির পড়া জরুরি কিনা ?

উত্তর: কসর শুধু মাত্র চার রাকাত বিশিষ্ট ফরজ নামাজের ক্ষেত্রে, সেহেতু বিতির ও সুন্নাত নামাজে কসর করতে পারবে না। তাই সর্বাবস্থায় বিতির পড়তে হবে। কেননা তা ওয়াজিব। তবে সুন্নাত ছেড়ে দেয়ার ক্ষেত্রে ফুকাহায়ে কেরামের মতানৈক্য রয়েছে। গ্রহনযোগ্য মতহল মুসাফির কোথাও অবস্থান করলে সুন্নাত আদায় করবে। আর চলন্ত অবস্থায় ইচ্ছা করলে ছেড়েও দিতে পারবে। (তিরমিজি ১/১২৩, শামী ২/৬১৩, হিন্দীয়া ১/১৩৯)

৩৯ প্রশ্ন: একমুষ্টির কম দাড়ি রাখে এমন ইমামের পিছনে ইকতেদা করার বিধান কি ?

উত্তর: একমুষ্টির কম দাড়ি রাখে এমন ব্যক্তিকে ইমাম বানাবে না। তাকে ইমাম বানানো মাকরুহ। তার পিছনে নামায কারাহাতের সাথে আদায় হয়ে যাবে। যদি অন্য কোন উপযুক্ত ইমাম না থাকে তাহলে তার পিছনেই নামায আদায় করবে, জামাত ছাড়বে না। এমতাবস্থেয় উপযুক্ত ও মুত্তাকি ইমাম তালাশ করা আবশ্যক।
(শামী ২/২৯৮, হিন্দীয়া ১/৮৪-৮৫ মাহমুদীয়া ১০/১৩৭)

৪০ প্রশ্ন: ফরয নামাযের তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাতে যদি কেহ সুরায় ফাতেহার সাথে অন্য সূরা মিলায় তাহলে তার নামাযের হুকুম কি ?

উত্তর: ফরয নামাযের তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাতে যদি কেহ সুরায় ফাতেহার সাথে অন্য সূরা মিলায় তাহলে তার নামায হয়ে যাবে। সিজদা সাহু আবশ্যক হবে না। (শামী ২/১৫০, হিন্দীয়া ১/১২৬, রাহিমীয়া ৫-৬/১৮৫)

৪১ প্রশ্ন: রমজান ব্যতীত অন্য মাসে “মুনফারাদ” ব্যক্তি বিতির নামাযে উচ্চস্বরে ক্বরাত পড়তে পারবে কিনা ?

উত্তর: রমজান ব্যতীত অন্য মাসে “মুনফারাদ” ব্যক্তি বিতির নামাযে উচ্চস্বরে ক্বরাত পড়তে পারবে না বরং নিম্ন স্বরে ক্বিরাত পড়তে হবে। (শামী ১/৪৬৯-৫৩৩, হিন্দীয়া 1/72)

৪২ প্রশ্ন: রমযান মাসে ইশার ওয়াক্তে মসজিদে গিয়ে দেখি তারাবীর নামায শুরু হয়ে গেছে, এমতাবস্থায় আমার করনীয় কি ? ইশার ফরয এবং সুন্নাত নামায একাকি পড়ে নিয়ে তারাবীর জামাতে শরীক হব ? না কি প্রথমে তারাবীর জামাতে শরীক হয়ে বিতিরের পূর্বে ফরজ ও সুন্নাত আদায় করব ।

উত্তর: এমতাবস্থায় আপনার করনীয় বিষয় হল, প্রথমে ইশারের ফরয  ও সুন্নাত পড়ে নিবেন তারপর তারাবীর জামাতে শরীক হবেন। (দুরুল মুখতার ২/৪৯৯-৫০০, হিন্দীয়া ১/১১৭, মাহমুদিয়া ১১/৬৭০)

৪৩ প্রশ্ন: জনৈক ইমাম সাহেব চার রাকাত-বিশিষ্ট নামাজে তৃতীয় রাকাতে ভূলে “আলহামদু লিল্লাহির রব্বীল আলামিন” উচ্চস্বরে পড়ে ফেলেন এতে কি তার উপর সিজদাসাহু ও ওয়াজিব হয়েছে ? কতটুকু আয়াত উচ্চস্বরে পড়লে সিজদায়ে সাহু ওয়াজিব হয় ? 

উত্তর: উল্লিখিত সূরতে ইমাম সাহেবের উপর সিজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে না। ছোট তিন আয়াত বা তার পরিমাণ পড়লে সিজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে। (শামী ২/৫৪৫, কাযিখান ১/৭৬, মাহমুদিয়া ১১/৪৮১)

৪৪ প্রশ্ন: সূরা “ছদ” এর মধ্যে কোন আয়াতের পর ইমাম সাহেব সজদা আদায় করবে ?

উত্তর: সুরা “ছদ” এর মধ্যে ইমাম সাহেব আয়াতের পর সেজদা করবে।(শামী ২/৬৯৪, বাদায়েউসনায়ে ১/৪৫২)

৪৫ প্রশ্ন: বিনা অযুতে আযান দেওয়া কি শুদ্দ্ব ? বিস্তারিত জানিয়ে উপকৃত করবেন।

উত্তর: আযানের জন্য পবিত্রতা শর্ত নয়। তাই বিনা অযুতে আযান দেওয়াতে কোন সমস্যা নেই, আযান শুদ্দ্ব হয়ে যাবে। (হিন্দীয়া ১/৫৪, আল বাহরুর রায়েক ১/৪৫৮)

৪৬ প্রশ্ন: যদি ইমাম সাহেব রুকু থেকে উঠার সময় উচ্চস্বরে তাকবীর বলেতে ভূলে যান। তবে কি তার উপর সিজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে ?

উত্তর: যদি ইমাম সাহেব রুকু থেকে উঠার সময় উচ্চস্বরে তাকবীর বলেতে ভূলে যান। তবে কি তার উপর সিজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে না। যেহেতু উচ্চস্বরে তাকবীর বলা সুন্নাত।
(হিন্দীয়া ১/৭৫, হাক্কানিয়া ৩/৯৭)

৪৭ প্রশ্ন:আমার বয়স ৬৫ বছর। পায়ে সমস্যা থাকার কারণে সুন্নাত তরিকায় বৈঠকে বসতে পারিনা বরং আসন করে বসতে হয় প্রশ্নহল ওজরের কারণে আমি এভাবে বসে নামাজ আদায় করাতে পারব কি না ?

উত্তর: ওজরার কারণে আসন করে বসে নামাজ পড়া যায়েজ আছে তাই আপনার ওজর থাকার কারণে আপনি বৈঠকে আসন করে বসতে পারবেন। (শামী ২/৬৮১, হিন্দীয়া ১/১৯৬)

৪৮ প্রশ্ন: আমার ছেলে আমার কাছে আলমারির চাবি চায়। আমি তখন নামাজে, মাথা নেড়ে ইশারা করে জায়গাটা তাকে দেখিয়ে দেই। এতে কি আমার নামাজ নষ্ঠ হয়ে গেছে ?

উত্তর: আপনার নামাজ নষ্ট হয়নি। কেননা কোন ব্যক্তি যদি নাকাজি ব্যক্তি থেকে কোন কিছু চায় ফলে সে মাথার দ্বারা ইশারা করে সেখিয়ে সেয় তাহলে তার নামাজ নষ্ট হয় না। (বাহরুরায়েক ২/১৪, হিন্দীয়া ১/১৬৩)

৪৯ প্রশ্ন: আমি মাগরিবের নামাজে ইওমাম সাহেব যখন প্রথম বৈঠকে তখন নামাজে শরিক হই তাকবীরে তাহরীমা বেঁধে বসার কিছুক্ষন পর ইমাম সাহেব দাঁড়িয়ে যান, এতক্ষনে আমি তাশাহুদের পাঁচ সাতটি শব্দ পড়তে পেরেছি , প্রশ্ন হল এখন কি আমার তাশাহুদ পূর্ন করতে হবে নাকি দাঁড়িয়ে যাব ? জানালে কৃতঘ থাকব।

উত্তর: আপনার তাশাহুদ পূর্ন করে দাড়াতে হবে। 
(শামী ২/২০২, তাতারখানীয়া ২/১৯১, এমদাদুল ফতোয়া ১/৫১)

৫০ প্রশ্ন: জানাজার নামাযে সূরা ফাতেহা পাঠ করা যায়েজ আছে কি ? গয়রে মুকাল্লেদ ভাইয়েরা বলে থাকেন রাসূল (রাঃ) এর হাদীস “লা সলাতু ইলা বাফনি হাতাল কাতিব” এর কারণে জানাজার নামাযেও সূরা ফাতেহা পড়া ওয়াজিব, সঠিক মাসআলা জানিয়ে উপকৃত করবেন।

উত্তর: জানাজার নামাযে সূরা ফাতেহা দুয়া হিসেবে পড়ে তাহলে কোন সমস্যা নেই। আর যদি কেরাতের নিয়তে পড়ে তাহলে যায়েজ হবে না। কেননা জানাজার নামাজ হচ্ছে দুয়ার স্থান, ক্বেরাতের স্থান নয়, সুতরাং ভাইদের উক্ত কথা সঠিক নয়। (শামী ১/১২২, হিন্দীয়া ১/২২৫)

৫১ প্রশ্ন: আমি মাগরিবের নামাযে ইমামের সাথে এক রাকাত পাই। ইমাম সাহেবের শেষ বৈঠকে আমি কি পড়ব ? তাশাহুদ , দুরুদ, দোয়া , সবগুলি নাকি শুধু তাশাহুদ ? কেননা এটাতো আমার জন্য শেষ বৈঠক নয়। যদি শুধু তাশাহুদ পড়ি তাহলে কিছু সময়তো বাকি থাকে তখন কি করব ?

উত্তর: আপনি শেষ বৈঠকে তাশাহুদ ধীরে ধীরে পড়বেন যেন ইমাম সাহেবের সালাম ফিরানো পর্যন্ত শেষ হয়, ইমাম সাহেবের সালাম ফিরানোর পূর্বে তাশাহুদ পড়া শেষ হয়ে গেলে সালাম ফিরানোর আগপর্যন্ত তথা “আসহাদু আল্লাইলাহা ইল্লাল্লাহু” থেকে শেষ পর্যন্ত বার বার পড়তে থাকবেন। (হাক্কানীয়া ৩/১৮৮, কাযিখান ১/৬৬, তাতারখানিয়া ২/১৯৭)

৫২ প্রশ্ন: নামাজে দুই সিজদার মাঝের বৈঠকে কি পড়তে হবে ? এ ব্যপারে হাদিস শরীফের বর্ণনা বা ফোকাহায়ে কেরামের উক্তি জানতে চাই ?

উত্তর: ইমাম মুনফারিদ মুত্তাদী সকলের জন্য সর্ব প্রকার নামাজে দুই সিজদার মাঝখানে মাগফিরাতের দোয়া পড়া মুস্তাহাব। তবে জামাতে যদি দুর্বল লোক থাকে তাহলে না পড়া উচিৎ। এ ব্যপারে হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্নিত আছে তিনি বলেছেন,রাসূল সাল্লাল্লাহু (আঃ) দুই সিজদার মাঝখানে নিন্মে বর্নিত দোয়া পড়েছেন। যা বর্নিত তিরমিজি শরীফ খন্ড ১ পৃষ্ঠা ৬৩  (তিরমিজি ১/৬৩, শামী ১/৫০৫-৫০৬)

৫৩ প্রশ্ন: আমি শুনেছি নামাজে শরীর চুলকালে নামাজ ভেঙ্গে যায়। জানার বিষয় হল, চুলকানোর ধরণ বা পরিমাণ কতটুকু ? একবার চুলকালেই কি নামাজ ভেঙ্গে যাবে ? একাধিক বার চুলকালে যদি নামাজ ভেঙ্গে যায় তবে পুরা নামাজের চুলকানো হিসাব করা হবে।নাকি এক রাকাতের একাধিক বারের হিসাব করা হবে ?

উত্তর: জরুরত ছাড়া নামাজে একবার চুলকানো মাকরুহে তাহরীমী, যদি এমন জরুরত হয়, যে চুলকানো ছাড়া আর পারতেছেনা তাহলে এক, দুবার চুলকানোর দ্বারা মাকরুহ হবে না। এবং এমনভাবে তিনবার চুলকানো যে চুলকানোর মাঝে এক রোকন পরিমাণ না থামে তাহলে নামাজ ভেঙ্গে যাবে যদিও জরুরত কারণে হোক। আর তিনবার হাতনা উঠিয়ে চুলকানোর দরুনও নামাজ ভাঙ্গবে না। এমনি ভাবে যদি একবার চুলকানোর পর এক রোকন পরিমাণ অর্থাৎ তিনবার বলা পরিমাণ থেমে থাকার পর চুলকায় এমন করে তিনবার চুলকানোর দ্বারাও নামাজ ভাঙ্গবে না। চাই তা পুরা নামাজে হোক বা এক রাকাতে হোক। (হিন্দীয়া ১/১০৪, তাতারখানিয়া ২/২৩৫)
৫৪  প্রশ্ন: আমাদের মহল্লার ইমাম সাহেব এশার নামাজে প্রথম রাকাতে ভুল বশত সূরা ফাতেহার পর্যন্ত আস্তে পড়েন।স্বরন হওয়ার পর পুনরায় সূরা ফাতেহা শুরু থেকে জোরে পড়েন।এবং শেষ বৈঠকে তাশাহুদের পর সাহু সেজদা করেন।জানার বিষয় হল উক্ত অবস্থায় নামাজের হুকুম কি?

উত্তর: সাহু সেজদা করার কারণে নামাজ ছহীহ হয়ে গেছে। তবে উচিত ছিল পরবর্তী আয়াত থেকেই জোরে পড়া।  (হিন্দীয়া ১/১২৬, মাহমুদিয়া ১১/৪৮০) 

৫৫ প্রশ্ন: আমি একজন শিক্ষক। হাফেজ বিভাগে পড়াই অনেক সময় নাবালেগ অপ্রাপ্ত বাচ্চা থেকে সেজদার আয়াত শুনি। প্রশ্ন হলো, বুঝমান অপ্রাপ্ত বয়স্ক বাচ্চার থেকে সেজদার তায়াত শুনলে তেলাওয়াতে সেজদা আদায় করতে হবে কি ? 

উত্তর: বুঝমান অপ্রাপ্ত বাচ্চা থেকে সেজদার আয়াত শুনলে সেজদায়ে তেলাওয়াত আদায় করতে হবে এবং তা আদায় করা ওয়াজিব।  
(শামী ৬/৫৮০-৫৮১, হিন্দীয়া ১/১৯২, তাতারখানীয়া ২/৪৬৬) 

৫৬ প্রশ্ন: আমার জানার বিষয় হল নামাজে দাড়ানোর ক্ষেত্রে দু পায়ের মাঝে কতটুকু ফাঁকা রাখতে হবে এবং এটার বিধান কি?

উত্তর: নামাজে দাড়ানোর ক্ষেত্রে দু পায়ের মাঝে চার আঙ্গল পরিমাণ ফাঁকা রাখবে, এবং এটা মুস্তাহাব। (শামী ২/১৬৩, বাজ্জাজিয়াত ১/২০, আল অললিজীয়া ১/১২৭)

৫৭ প্রশ্ন: মহিলারা নামাজে হাত কিভাবে বাধবে ? পুরুষদের মতই নিকি তাদের থেকে ভিন্ন কোন পদ্ধতিতে দয়া করে জানাবেন। 

উত্তর: মহিলারা নামাজে হাত পুরুষদের মত বাধবেনা, বরং বুকের উপর হাত বাঁধবে। 
(শামী ২/২২৮, হাক্কানিয়াত ৩/৯৫, হিন্দীয়া ১/১৩০)

৫৮ প্রশ্ন: এক কবরে কয়েক জনকে দাফন দেয়ার বিধান কি?

উত্তর: প্রয়োজনের সময় এক কবরে কয়েকজন দাফন দেওয়া শরিয়ত সম্মত, মূলত সুন্নাত হল এক কবরে একজনকে দাফন করা। তবে যদি পেয়োজন দেখা দেয় তাহলে এক কবরে কয়েক জনকে দাফন দেয়া যাবে। (তিরমিজি ১/৩০১, বাদায়েউসনায়ে ২/৬৩, ফাতহুল বারী ৩/৪৪৩)

৫৯ প্রশ্ন: যদি কোন ব্যাক্তি নামাজে আমিন এমন ভাবে বলে যে পাশের এক দুইজন শুনে ফেলে তাহলে তার নামাযের বিধান কি ?

উত্তর: প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে তার নামেয সহিহ হয়ে যাবে, যেহেতু এরুপভাবে আমীন বলা আস্তে আমীন বলার অন্তর্ভূক্ত। (শামী ২/৩০৮, তাতারখানীয়া ২/১৬২, দারুল উলুম ২/১৬২ )

৬০ প্রশ্ন: আযানের পর পর হাত  উঠিয়ে দোয়া করার বিধান কি ?

উত্তর: এ সময় হাত না উঠিয়ে দোয়া করা হাদিস দ্বারা প্রমানিত । সুতরাং হাত না উঠিয়ে দোয়া করা উওম। (মেশকাত ১৯৬, ফয়জুল বারী ২/১৬৭, ফাতুয়ায়ে মোহাম্মাদিয়া ৯/১৩৮) 

৬১ প্রশ্ন: আজান দেওয়ার হুকুম কি ? আজান ছাড়া মসজিদ কিংবা মসজিদের বাহিরে জামাতে নামাজ পড়ার বিধান কি ?

উত্তর: আজান দেওয়া সুনাতে মুয়াক্কাদা, মসজিদে  আজান দেওয়া ছাড়া জামাতে নামাজ আদায় করা মাকরুহ। তবে মসজিদ ছাড়া অন্যত্র যেমনঃ বাড়ি কিংবা মাঠে, যমিন, ক্ষেত কিংবা বাগানে আজান দেওয়া ছাড়া নামাজ আদায় করলে মাকরুহ  হবেনা। কেননা মহল্লার বা শহরের আজান তাদের জন্য যথেষ্ট। তবে আজান দিয়ে নামাজ পড়া ভাল। (ফাতহুল কাদীর ১/২৬১-২৬২, ফাতুয়ায়ে মোহাম্মাদিয়া ৯/১০৮, হিন্দীয়া ১/১১০)

৬২ প্রশ্ন: নামাযের মধ্যে জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ননা আসলে কেউ যদি ইচ্ছাকৃত উচ্চস্বরে কান্না করে তাহলে তার নামায ছহীহ হবে কি ?
  
উত্তর: হা, নামাজ ছহীহ হয়ে যাবে।  (তাতারখানিয়া ২/২২৪, হিন্দীয়া ১/১৫৯, ইমদাদুল ফাতুয়া ২/৪২৩)

৬৩ প্রশ্ন: জুমার ফরজের পূর্বে সুন্নাত চার রাকাত না দু রাকাত পড়তে হবে ? দলিল সহ বিস্তারিত জানালে উপকৃত থাকব ?
  
উত্তর: জুমার ফরজের পূর্বে সুন্নাআত চার রাকাত পড়তে হবে। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্নিত রাসূল (সাঃ) জুমার পূর্বে চার রাকাত নামাজ পড়তেন। - ইবনে মাজাহ খন্ড ১ পৃষ্ঠা ৭৯ । (তিরমিজি ১/১১৮, শামী ২/৪৫১, দুররুল মুখতার ১/২৮৩)

৬৪ প্রশ্ন: বিভিন্ন অফিস আদালত অথবা সামরিক এলাকাগুলোতে জুমুয়ার নামাজ আদায় করার হুকুম কি ?

উত্তর: বিভিন্ন অফিস আদালত ও ফ্যাক্টরী বা এধরনের অন্যান্য সংরক্ষিত এলাকায় জুমুয়ার নামাজ আদায় করা জায়েজ। 
(শামী ৩/২৮-২৯, দারুল উলূম ৫/১১০, ফাতুয়ায়ে আসমানি ১/৫৭১-৫৭৬)

৬৫ প্রশ্ন: নামাজ অথবা নামাজের বাহিরে পুরুষের সতর কতটুতু ?

উত্তর: নামাজ অথবা নামাজের বাইরে পুরুষের সতর নাভীথেকে নিয়ে হাটুর নিচ পর্যন্ত।
(শামী ২/৭৬, হিন্দীয়া ১/৫৮, তাতারখানিয়া ২/২১)

৬৬ প্রশ্ন: আমরা দুই বন্ধু একসাথে নামজ পড়ার  জন্য মসজিদে আসে, আমি পরিপূর্ন রাকাত ইমামের সাথে পাই, কিন্তু আমার বন্ধু “মাসবুক” হয়। অতঃপর ইমাম সাহেব সালাম ফিরানোর পর আমার বন্ধু তার ছুটে যাওয়া রাকাআত পড়ার জন্য দাড়িয়ে গেলে, আমি ও তার সাথে সাড়িয়ে যাই। এই মনে করে যে, যেহেতু তার রাকাআত ছুটে গেছে তাই আমার রাকাআত ও ছুটে গেছে। এখন প্রশ্ন হল , আমার করুনীয় কি ?

উত্তর: যদি অতিরিক্ত নামাযের জন্য সেজদা না করে থাকেন তাহলে বসে সেজদা সাহুর সাথে নামাজ শেষ করবেন, আর যদি ৫ম রাকাআতের সেজদা করে ফেলেন, তাহলে আরেক রাকাআত মিলাবেন। যাতে করে অতিরিক্ত দুই রাকাআত নফল হয়, এবং শেষ বৈঠকে সেজদায়ে সাহুর
সাথে নামাজ শেষ করবেন। 
(শামী ২/৬৬৭, মাহমুদীয়া ১১/৫৩৫, হিন্দীয়া ১/১৫৯) 

৬৭ প্রশ্ন: অসুস্থতার কারণে বসে বসে ইমামতি করা জায়েজ আছে কি ? এবং এক্ষেত্রে পিছনের মুক্তাদীদের ইকতেদা সহীহ হবে কি ?

উত্তর: হ্যাঁ, অসুস্থতার কারণে বসে বসে ইমামতি করা জায়েজ  এবং এক্ষেত্রে পিছনের দণ্ডায়মান মুক্তাদীদের ইকতেদা সহীহ।
(হিন্দীয়া ১/৮৫, তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৩৬৪, বাহরুররায়েক ১/৬৩৭)

৬৮ প্রশ্ন: জুমআর নামাজের পর কয় রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা ?

উত্তর: জুমআর নামাজের পর এক সালামে চার-রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা, তবে কেউ যদি এই চার রাকাত আদায় করে আরো নফল পড়তে চায় তার অনুমতি রয়েছে।
(বাদায়েউসনায়ে ১/৬৩৮, শামী ২/৪৫১, হিন্দীয়া ১/১১২)

৬৯ প্রশ্ন: নামাজের নিয়্যাত মধ্যে  “متوجها الي جهة الكعبة الشريفة”  বলা অর্থাৎ কেবলামুখী হওয়ার নিয়্যাত করা জরুরী কি ? 

উত্তর: নামাজের নিয়্যাতের মধ্যে কেবলার নিয়্যাত করা শর্ত নয়, বরং কেবলামুখী হওয়ার দ্বারাই নিয়্যাতের প্রয়োজন পূর্ণ হয়ে যায়। (সিরাজীয়া ৫৯, বাহরুররায়েক  ১/২৬১, হিন্দীয়া ১/৮০)

৭০ প্রশ্ন: কেউ যদি নামাজে “আল্লাহু আকবার” অর্থাৎ 'বা' কে মাদের সাথে এক-আলিফ টেনে পড়ে, তার নামাজ কি ভেঙ্গে যাবে ?

উত্তর: হ্যাঁ, নামাজে “আল্লাহু আকবার” এর “বা” এবং “হামজা” কে এক  আলিফ টেনে পড়লে নামাজ ভেঙ্গে যাবে। (শামী ২/১৪২, রহমানিয়া ৫/১০৯, ফিকহ ১/২০৩)

৭১ প্রশ্ন: বাস, ট্রেন, লঞ্চ, স্টিমার, ফেরী কিংবা বিমানে নামাজ আদায় করার ক্ষেত্রে কিবলামুখী হওয়া ফরজ ? যদি ফরজ হয় তাহলে এটা নামাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত আবশ্যক কি না ? অর্থাৎ কেবলামুখী হয়ে নামাজ শুরু করারা পর যদি বাহন কেবলার দিক থেকে ঘুরে যায় তাহলে নামাজের মধ্যে কি আমাকে কেবলার দিকে ঘুরে যেতে হবে ?

উত্তর: বাস, ট্রেন, লঞ্চ, স্টীমার, ফেরী কিংবা বিমানে নামাজ আদায় করার ক্ষেত্রে কিবলামুখী হওয়া ফরজ। কেবলামুখী হয়ে নামাজ শুরু করারা পর যদি বাহন কেবলার দিক থেকে ঘুরে যায় তাহলে নামাজরত ব্যক্তি ও নিজের চেহারাকে কেবলার দিকে ফিরাবে। আর যদি কেবলার দিকে মুখ ফিরানো সম্ভব না হয় তাহলে নামাজ পরে আদায় করবে। কেননা কোন অবস্থাতেই ফরজ নামাজ অন্য দিকে ফিরে আদায় করা জায়েজ হবে না।
(শামী ২/৬৯০-৬৯১, হিন্দীয়া ১/২০৪, বাহরুররায়েক ২/২০৬)

৭২ প্রশ্ন:শুনেছি যে মুক্তাদীর জন্য ইমাম সাহেবের ইক্তেদা করা ওয়াজিব এবং একটি হাদীসে আছে যে  انماجعل الامام لئم به তাহলে আমি হানাফী লোক যদি কোন শাফেয়ী ইমামের পিছনে বা কাবা শরীফের ইমামের পিছনে ইক্তেদা করি যারা رفع اليد ين করে এবং বুকে হাত বাধে তাহলে আমি কি তাদের বিপরীত করতে পারবো, পারলে কোন হাদীস ও ফেকহী দলীলের অনুসারে।

উত্তর: হানাফী মাযহাবের অনুসারী ব্যক্তি শাফেয়ী মাযহাবের অনুসারী অথবা অন্য কোন মাযহাবের অনুসরণকারী ইমামের পিছনে এক্তেদা করলে নামাজ সহীহ হয়ে যাবে। যদি একথা জানাজায় যে ইমাম সাহেব মুক্তাদীর মাযহাবের প্রতি লক্ষ রাখেন। তবে رفع اليد ين  ও জোরে আমীন বলার ক্ষেত্রে মুক্তাদী স্বীয় মাযহাবের অনুসরণ করবে। 
(তাতারখানিয়া ২/২৪৯, সিরাজী ৯৮, শামী ২/১৬৭)

৭৩ প্রশ্ন: আমাদের ইমাম সাহেব কেরাতে একটি মারাত্মক ভুল করেন। যার কারণে কুরআনের অর্থ একে বারেই পাল্টে যায় কিন্তু সাথে সাথেই তা শুধরে নেয় এবং সহীহভাবে কেরাত পড়ে শেষ করেন এতে নামাজ সহীহ হয়েছে কি ?

উত্তর: নামাজে ভুল পড়ার পর যদি তা পুনরায় সহীহ করে পড়ে নেয় তাহলে নামাজ সহীহ হয়ে যাবে।  (শামী ২/৩৯৩, হিন্দীয়া ১/১৪০, রহিমীয়া ৫/৯১)

৭৪ প্রশ্ন: মসজিদের মধ্যে খাটিয়া উপস্থিত করে জানাজা আদায় করা জায়েজ আছে কি ?

উত্তর: জায়েজ নয়, বরং মাকরুহে তানজিহী, তবে বৃষ্টি বা অন্য কারণে নিরুপায় হলে মসজিদে জানাজার নামাজ আদায় করা জায়েজ। তবে যে মসজিদকে শুধু জানাজা আদায় করার জন্য বানানো হয়েছে তাতে আদায় করায় কোন সমস্যা নেই।
(হিন্দীয়া ১/১৬৫, শামী ৩/১২৬, বাহরুররায়েক ২/৩২৭)

৭৫ প্রশ্ন: আমার এক ভাই ইমামের সাথে নামাজ আদায় করছিল দাঁড়ানো অবস্থায় তার ঘুম এসে যায়, এদিকে ইমাম সাহেব রুকুর শেষে সিজদায় যাচ্ছিলেন, তখন সে জেগে উঠে নিজে নিজে রুকু করে সিজদায় শরীক হয়। জানার বিষয় হল ঐ ব্যক্তির নামাজ হয়েছে কি ?

উত্তর: হ্যাঁ, নামাজ হয়েছে, কেননা কোন ব্যক্তি যদি ইমামের সাথে নামাজে শরীক হয়ে কোন কারণবশত তার নামাজের কোন অংশ ছুটে যায়, তাহলে এক্ষেত্রে শরয়ী বিধান হল প্রথমে সে তার নামাজের ছুটে যাওয়া অংশ আদায় না করে বাকি নামজে ইমামের সাথে শরীক হয়ে যায়, এবং ইমামের নামাজ শেষে হওয়ার পর তার ছুটে যাওয়া অংশ কাজা আসায় করে নেয়, তাহলেও তার নামাজ সহীহ হবে। (হিন্দীয়া ১/৯২, বাহরুররায়েক ১/৬২৪, বাদায়েউসসানায়ে ১/৩৪৭) 

৭৬ প্রশ্ন: আমার কোমর এবং পিঠে ব্যথা থাকার কারণে পুরোপুরি রুকুতে যেতে পারি না , তবে কিছুটা সম্ভব। আমার জানার বিষয় হল, নূন্যতম কতটুকু ঝুঁকলে রুকু আদায় হবে ?

উত্তর: নূন্যতম রুকু আদায় হওয়ার জন্য পূর্ন রুকুর কাছাকাছি পর্যন্ত ঝুঁকতে হবে। অর্থাৎ এই পরিমাণ ঝুঁকতে হবে যে, পূর্ণ দাঁড়ানো অবস্থা ও পূর্ণ রুকুর অবস্থার মাঝে যেন রুকুর দিকটা হয়। অবশ্য সতর্কতা হল, নূন্যতম রুকু আদায় হওয়ার জন্য এ পরিমাণ ঝোঁকা, যাতে হাত হাঁটুতে পৌঁছে। (শামী ২/১৩৪, বাদায়উসসানায়ে ১/৩৯৮, হিন্দীয়া ১/৭০) 

৭৭ প্রশ্ন: ফরজ নামাজের শেষের দুই রাকাতে ভুলে সুরা ফাতিহার পর “বিসমিল্লাহ” পড়া হলে সাহু সেজদাহ দিতে হবে কি ?

উত্তর:  ফরজ নামাজের শেষের দুই রাকাতে ভুলে সুরা ফাতিহার পর “বিসমিল্লাহ” পড়া হলে সাহু সেজদাহ দিতে হবে না। (শামী ২/১৫০, হিন্দীয়া ১/১২৩, তাতারখানীয়া ২/৩৯২)

৭৮ প্রশ্ন: ইমাম সাহেব যদি নামাযের শেষে বৈঠক না করে দাঁড়িয়ে যায়, তখন মুক্তাদির করনীয় কি ? ইমামের অনুসরণ করবে , নাকি করবে না ?

উত্তর:  ইমাম সাহেব যদি নামাযের শেষে বৈঠক না করে দাঁড়িয়ে যায়, তখন মুক্তাদি ইমামের অনুসরণ করবে না। বরং বসে ইমাম সাহেব ফিরে আসার অপেক্ষা করবে। যদি ইমাম সাহেব ৫ম রাকাআতের সেজদা করার আগে ফিরে আসে, মুক্তাদিগন তার সালামে অংশ গ্রহণ করবে। আর যদি ইমাম সাহেব ৫ম রাকাআতের সেজদা করে ফেলে তাহলে সকলের ফরয নামায বাতিল হয়ে নফলে পরিণত হবে। 
(শামী ২/৬৬৫, কাদীর ১/৫২৯, বাহরুররায়েক ২/১৮৩)

৭৯ প্রশ্ন: খৎবার সময় টাকা উঠানোর বিধান ?

উত্তর: জুমু’আ ও ঈদের খুৎবা চলাকালীন সময় নামায পড়ারও অনুমতি নেই। কারণ রাসূল (সাঃ) এ সময় নামায ও কথাবার্তা ছেড়ে খুৎবা শ্রবন করার আদেশ করেছেন। সুতরাং খুৎবার সময় কোনো ধরনের নামায, মুখে উচ্চারন করে যিকির আজকার, কুরাআনুল কারীমের তেলাওয়াত, কথাবার্তা ও টাকা-পয়সা উঠানোসহ কোনো ধরনের কাজ জায়েজ নেই। চুপচাপ ইমামের খুৎবা শোনা ওয়াজিব। অতএব খুৎবার সময় টাকা উঠানোর প্রথা বর্জনীয়। (বুখারী শরীফ ১/২২১, তাহাবী শরীফ ১/২৫৩, শামী ৩/৩৭)

৮০ প্রশ্ন: আমার শশুরবাড়ী আমাদের বাড়ী থেকে এতটুকু দূরে যে সেখানে গেলে শরয়ী মুসফির হয়ে যাই । এমর্মে আমার জানার বিষয় হলো আমার স্ত্রী যদি পিতার বাড়ীতে যায় তাহলে সে কি কসর আদায় করবে ? নাকি মুকিম হিসাবে পূর্ন নামাজ আদায় করবে ?

উত্তর: আপনার স্ত্রী তার পিতার বাড়ীতে গিয়ে যদি পনের দিন থাকার নিয়ত না করে তাহলে সে
মুসাফির হিসাবে কসর আদায় করবে। (তাতারখানীয়া ২/৫১০, হিন্দীয়া ১/২০২, শামী ২/৬১৪)

৮১ প্রশ্ন: নামাজের মধ্যে জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ননা আসলে কেউ যদি ইচ্ছাকৃত উচ্চস্বরে কান্নাকরে তাহলে তার নামাজ ছহীহ হবে কি ?

উত্তর: হা, নামাজ ছহীহ হয়ে যাবে। (তাতারখানীয়া ২/২২৪, হিন্দীয়া ১/১৫৯, কাযীখান ১/৮৫)

৮২ প্রশ্ন: যদি কোন ব্যক্তি নামাজে আমিন এমন ভাবে বলে যে পাশের এক দুইজন শুনে ফেলে তাহলে তার নামাজের বিধান কি ?

উত্তর: প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে তার নামাজ সহিহ হয়ে যাবে  ফেহেতু এরুপভাবে আমীন বলা আস্ত্র আমীন বলার অন্তর্ভূক্ত। (শামী ২/৩০৮, খুলাছাতুল ফাতুয়া ১/৯৫, তাতারখানীয়া ২/১৬২)
  
৮৩ প্রশ্ন: ঈমাম সাহেব পরিপূর্ন মেহরাবে দাড়ালে মাকরুহ হবে কি না ?

উত্তর:  সাহেব পরিপূর্ন মেহরাবের ভেতরে দাড়ানো মাকরুহ। (শামী ১/৬৪৫, হিন্দীয়া ১/১৬৭)

৮৪ প্রশ্ন: নামাজের মধ্যে  اشهد ان الااله الاالله  বলার সময় ইশরা করার সঠিক পদ্ধতি কি ?

উত্তর: তাশাহুদের মধ্যে   اشهد ان الااله الاالله  বলার সময় শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করা সুন্নাত । ইশারা করারা সঠিক পদ্ধতি হলো এই যে, কনিষ্ঠা ও অনামিকা কে হাতের তালুর সাথে মিলিয়ে রাখবে এবং  মধ্যমা ও দৃদ্ধা আঙ্গুলের দ্বারা হালকা বানাবে। অতঃপর শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা উশারা করবে,  لااله বলার সময়  আঙ্গুল কিছুটা নিচে নামাবে ও হাতের এ অবস্থা নামাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত বাকি রাখবে। 
(শামী ২/২৬৮, শামী ২/২৬৬, ফাতহুল কাদীর ১/৩২১, তাতারখানীয়া ২/১৮৭)

৮৫ প্রশ্ন: মাগরীবের নামাজের ইমামতি করতে গিয়ে আমি প্রথম রাকাতে সূরা ইখলাস পড়ি এবং দ্বিতীয় রাকাতে সূরা কুরাইশ পড়ি নামাজ শেষে জনৈক আলেম বলেন আমার এই তারতীবে সূরা পড়ায় নামাজ মাকরূহ হয়েছে। উক্ত আলেমের কথে কি সঠিক ?

উত্তর: হ্যা, মাকরূহ হয়েছে। তবে মাকরূহে তানযিহী। এই তারতীব যেহেতু নামাজের ওয়াজিব সমূহের অন্তর্ভূক্ত নয় , তাই কোন সিজদাহ সাহু আবশ্যক হবেনা।
(শামী ২/২৬৯, বাহরুররায়েক ২/১৬৫, মুহাম্মাদীয়া ১০/৫০৬)

৮৬ প্রশ্ন: আমি নামাজে মাসবুক হলে ইমাম সাহেব এক দিকে সালাম ফিরানোর পরপই দাঁড়িয়ে যাই ছুটে যাওয়া নামাজ আদায় করার জন্যে। কিছু লোককে দেখিছি তারা ইমামের দুই সালামের পর ছুটে যাওয়া নামাজ আদায় করার জন্য দাড়ান, এ ক্ষেত্রে সঠিক মাসআলা কোনটি ?

উত্তর: মাসবুক ব্যক্তি ঈমাম সাহেবের দুই সালামের অপেক্ষা করবে। এবং এমন সময় দাঁড়াবে যে, ইমাম সাহেব পরিপূর্ন ভাবে নামাজ শেষ করেছেন, এবং তার উপর কোন সাহু সিজদা নেই বলে বুঝে আসে। (শামী ২/৩৪৮, হিন্দীয়া ১/৯১, বাহরুররায়েক ১/৬৬২)
  
৮৭ প্রশ্ন: আমি জানি চার রাকাত বিশিষ্ট নামাজে এক রাকাত পেলে মুনফারিদ এক রাকাত আদায় করে মাঝের বৈঠক করবে, এক্ষেত্রে কেউ যদি দুই রাকাত আদায় করে মাঝের বৈঠক করে। তাহলে তার নামাজ সহিহ হবে কি না ?

উত্তর: চার রাকাত বিশিষ্ট নামাজে কেউ যদি ইমামের সাথে এক রাকাত পায় তাহলে তার বাকি তিন রাকাত আদায়ের ক্ষেত্রে এক রাকাত অথবা দুই রাকাত আদায় করেবৈঠক করার উভয় রেওয়ায়েতই রয়েছে তবে এক রাকাত আদায় করে বৈঠক করে, তবে তার নামাজ সহিহ হয়ে যাবে। সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে না। (শামী ২/৩৪৭, বিদায়েউসনায়ে ১/৫৬৭, হিন্দীয়া ১/৯১)

৮৮ প্রশ্ন: আমি নিয়মিত তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করি একদিন নামাজ ছুটে গেলে খুব খারাপ লাগে, গত কাল যখন ঘুম থেকে উঠি তখন ফজরের সময় হয়ে গেছে মসজিদে তখনও আদান হয়নি তড়িঘড়ি করে অজু করে তাহাজ্জদের নামাজ আদায় করি। এর পর একটি নামাজ শিক্ষা বইওত দেখি ফজরের ওয়াক্ত হওয়ার পর ফজরের দু রাকাত সুন্নাত এবং দু রাকাত ফরজ ব্যতিত আর কোন নামাজ পড়া যায়েজ নেই। আমার জানার বিষয়  হল , ক্তহাটি কি  গ্রহন যোগ্য যদি গ্রহন যোগ্য হয় তাহলে এটাকি আদান দেওয়ার পূর্বে ও যায়েজ হবে না ?

উত্তর:  কথাটি গ্রহন যোগ্য। আজান দেওয়ার পূর্বেও নামাজ যায়েজ হবে না। কারন হচ্ছে সুবহে সাদিক হওয়ার পর থেকে ফজরের নামাজের সূন্নাত দু আরাকাত এবং ফরজ দু রাকাত ব্যতিত আর অন্য কোন নফল নামাজ পড়া যায়েজ নেই। 
(শামী ২/৪৫৫, ফাতুয়ায়ে আসমানী ১/৪৭৮, মুহাম্মাদিয়া ৯/৯৫)

৮৯ প্রশ্ন: জুমার প্রথম আদানের পরে কিতাব মুতালা কোরআন শরীফ তেলাওয়াত করা, কাপড় ধোয়া গোসল করা , কাপড় স্ত্রী করা, ইত্যাদি কাজ  করার কি হুকুম ?

উত্তর: জুমার প্রথম আজানের পর মসজিদে যাওয়া ওয়াজিব এবং এমন কাজ করা যা জুমার নামাজ আদায় করার উদ্দেশ্যে যাওয়া জন্য প্রতিবন্ধক তা মাকরুহে তাহরিমী তবে জুমায় যাওয়ার প্রস্তুতিমূলক কাজ করা যেতেপারে যেমনঃ গোসল করা বা অজু করা কিংবা কাপড় পড়া সুতরাং আজানের পর মসজিদে না গিয়ে কোরআন শরিফ তেলাওয়াত করা, কিতাব মুতালা করাকাপড় কাচাঁ, কাপড় স্ত্রী করা সবই মাকরুহে তাহরিমী। 
(মারেফুল কুরআন ৮/৪৪২, হিন্দীয়া ১/২১০, তাতারখানীয়া ২/৫৯৩)

৯০ প্রশ্ন: জুমার ফরজের পূর্বে সুন্নাত চাত রাকাত না দু রাকাত পড়তে হবে ? দলিল সহ বিস্তারিত জানালে উপকৃত থাকব ?

উত্তর: জুমার ফরজের পূর্বে সুন্নাত চার রাকাত পড়তে হএব। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আদ্দাস (রাঃ) থেকে বর্নিত রাসূল (সাঃ) জুমার পূর্বে চার রাকাত নামাজ পড়তেন। ইবনে মাজাহ খন্ড ১ পৃষ্ঠা ৭৯ । (তিরমিজি ১/১১৮, সুনানে ইবনে মাজা ১/৭৯, শামী ২/৪৫১)

৯১ প্রশ্ন: আমি গত বছর ব্যবসায়ীক কাজে একটি বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুক্ষিন হই, গতকাল আসরের নামাজে হঠাৎ সে কষ্টের কথা মনে পড়ে যায়, এবং অনিচ্ছাকৃত ভাবে আমার মুখ থেকে স্বশব্দে একটি আফসোস বাচক শব্দ বের হয়ে আসে, আমি বিষয়টি ইচ্ছে করে স্মরণ করিনি, আমার জানার বিষয় হল, এতে কি আমার নামাজের কোন ক্ষতি হবে ?
উত্তর: আপনার মুখ থেকে আফসোস বাচক শব্দবের হওয়ার কারণে নামাজ ভেঙ্গে গেছে। তাই উক্ত নামাজ পুনরায় আদায় করতে হবে। (শামী ২/৩৭৭, হেদায়া ১/৪০৭, বাহরুররায়েক ২/৩-৫)

৯২ প্রশ্ন: মাসবুক কখন ছানা পড়বে ? চাই সে নামায ‘جهري’ হোক বা ‘سري’ হোক। কেয়ামের অবস্থায় নামযে শরীক হোক বা রুকু-সিজদা অথবা বৈঠক অবস্থায় শরীক হোক, বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব।

উত্তর: মাসবুক যদি ইমামকে জাহরী কেরাত বিশিষ্ট ১ম, ২য় রাকাতে পায় তাহলে ছানা পড়বে না। আর শেষ এক বা দুই রাকাতে পাইলে ছানা পড়বে। জাহরী কেরাত বিশিষ্ট সুরায়ে ফাতেহাতে পাইলে ফোকাহায়ে কেরামের মতে ছানা পড়বে। এমনি ভাবে ইমামকে রুকু বা সিজদাতে পাইলে অনুমান করবে যদি রুকু বা সিজদা পাবে বলে প্রবল ধারনা হয় তাহলে ছানা পড়বে অন্যথায়  নয়। ইমামকে কেরাত পড়া অবস্থায় পাইলে ছানা পড়বে না বরং শুনবে। বসা অবস্থায়  পাইলে ছানা পড়বে না । এমনিভাবে নিম্নস্বরে নামাযে ইমামের দাঁড়ানো অবস্থায় উপস্থিত হলে ছানা পড়বে। এবং ছুটে যাওয়া নামায আদায়ের সময় দ্বিতীয় বার ছানা পড়বে।
(খোলাছা ১/১৬৫, হিন্দীয়া ১/৯০-৯১, গুনিয়াতুল মুস্তামলী ২৬৫)

৯৩ প্রশ্ন: কোন ব্যক্তি যদি সর্বদা সুন্নাতে মুয়াক্কাদা ছেড়ে দেয় তাহলে সে গোনাহগার হবে কি না ? হলে কোন ধরনের গোনাহ গার হবে ?

উত্তর: কোন ব্যক্তি যদি সর্বদা সুন্নাতে মুয়াক্কাদা ছেড়ে দেয় তাহলে সে গোনাহগার হবে। এবং তা মাকরুহে তাহরিমী। (শামী ১/২১৮, বাহরুর রায়েক ১/৫২৭, হিন্দীয়া ১/৫৭) 

৯৪ প্রশ্ন: আমি যহরের নামাযের জন্য অযুকরি তৎক্ষণাৎ আমার এক আত্মীয়র রক্ত সল্পতা দেখা দেওয়ায় আমি তাকে এক ব্যাগ রক্ত দেই। এর পর অযু না করে জোহরের নামায আদায় করি। এমর্মে আমার জানার বিষয় হল, আমার নামায হয়েছে কি না ?

উত্তর: না, আপনার নামায আদায় হয় নি। তাই সময় থাকলে পুনরায় অযু করে নামাজ আদায় করে নিবেন। নতুবা কাযা করা আবশ্যক। 
(শামী ১/২৬৪, হিন্দীয়া ১/১০-১১, তাতারখানীয়া ১/২৪৫) 

৯৫ প্রশ্ন:তারাবীর নামাজের শেষের দিকে আমার এস্তেঞ্জার প্রয়োজন দেখা দেয়ায় আমি বাহিরে আসি অজু করে মসজিদে গিয়ে বিতিরের এক রাকাত পাই, পেশ্ন হল ছুটে যাওয়া রাকাত আদায় করার সময় আমি কি আবার দোয়ায়ে কুনূত পড়ব ?

উত্তর: ছুটে যাওয়া রাকাত আদায় করার সময় আপনার দোয়ায়ে কুনূত পুনরায় পড়া লাগবে না। কেননা দোয়ায়ে কুনূত বার বার পড়া শরিয়ত সম্মত নয়। 
(শামী ২/৫৪১, হিন্দীয়া ১/১৭১, ফাতহুল কাদীর ১/৪৫২)

৯৬ প্রশ্ন: যে ইমাম সাহেব বেপর্দা হয়ে চলে, মোবাইলে নাচ গান দেখে এবং মহিলাদের সাথে করমর্দন করে ও বেপর্দা হয়ে ডাক্তারি করে। এরকম লোককে ইমাম বানানো, তার পিছনে ইক্তেদা করা ও তাকে ইমাম হিসাবে নিয়োগ দেওয়ার ব্যাপারে ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক কি ফায়সালা?

উত্তর: এমন ব্যক্তিকে ইমাম হিসেবে নিয়োগ দেয়া ও তার পিছনে নামাজ পড়া মাকরুহে তাহরিমী। পরহেজগার ইমাম নিয়োগ দেওয়ার ব্যাপারে সকলের সচেষ্ট হতে হবে। এক্ষেত্রে যদি ইমাম সাহেব উক্ত কাজ পরিহার করেন, তওবা করে তাকওয়া অবলম্বন করেন তাহলে তার পিছবে ইকতেদা করতে কোন সমস্যা নেই। তবে ওজর বশত: তার পিছনে নামাজ আদায় করলে নামাজ  আদায় হয়ে যাবে। 

(শামী ২/২৯৯, ফাতহুল কাদীর ১/৩৫৯, মাহমুদিয়া ১০/৮৯, বাহরুররায়েক ১/৬১০) 

Comments

  1. নামাজে দাঁড়ানোরসময় হাত কোথায় থাকবে?

    ReplyDelete
    Replies
    1. সরাসরি সোজা আপনি অবস্থায় রাখবেন

      Delete
  2. যদি ইমাম সাহেব অছরের নামাজে তিন বার বৈঠক করে তাহলে নামাজ হবে?

    ReplyDelete
  3. ভুলে দুবার সেজদায়ে সাহু দিলে নামাজ হবে কি?

    ReplyDelete
  4. হিন্দিয়া কি

    ReplyDelete
  5. যদি কোন ব্যক্তি বোতলে পশ্রাব নিয়ে পকেটে রেখে নামাজ আদায় করে নেয় তার নামাজের হুকুম কি???

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

পবিত্রতা প্রসঙ্গে - পুরো অধ্যায়

প্রশ্ন আছে ৪৮ টি - দলিল সহ ০১ প্রশ্ন: ফরয গোসলে নাকে পানি দেওয়ার বিধান কি ? উত্তর: ফরয গোসলে নাকে পানি দেওয়া ফরয।   (শামী ১/৩১১, বাদায়েউসসনায়ে ১/১৪২, হাক্কানীয়া ২/৫২১) ০২ প্রশ্ন: অনেকে বলে থাকেন, অজু করে কাপড় দিয়ে হাত মুখ মোছা উচিৎ নয়, এতে সওয়াব কমে যায়, কথাটি কি সঠিক ? অজুর পর হাতমুখ মোছার বিধান কি ? জানালে কৃতঙ্গ থাকব।  উত্তর: অজুর পর কাপড় দিয়ে হাত মুখ মোছাতে কোন সমস্যা নেই, বরং কেউ কেউ একে অজুর আদব এবং মুস্তাহাব হিসেবে উল্লেখ করেছেন, সুতরাং যারা বলে যে অজু করে কাপড় দিয়ে হাত মুখ মোছা উচিৎ নয়। এতে সওয়াব কমে যায় তাদের এ কথা সঠিক নয়।  (শামী ১/২৭৯, হিন্দীয়া ১/৬৫, দারুল উলুম ১/১৩১ ) ০৩ প্রশ্ন: আমি মেহেদী পাতা বেটে হাতে দেই পরবর্তিতে আমার মেয়ে জানায় মেহেদীর মধ্যে নাপাক পানি পড়ে তা নাপাক হয়ে গেছে, এখন আমার জানার বিষয় হল নাপাক মেহেদী দ্বারা হাত রঙ্গিন করার পর হাত পবিত্র করার পদ্ধতি কি। উত্তর: নাপাক মেহেদী দ্বারা হাত রঙ্গিন করার পর পরিষ্কার পানি বের হওয়া পর্যন্ত হাত ধৌত করলে হাত পবিত্র হয়ে যায়। যদিও রং বাকি থাকে। (শামী ১/৫৯০,  হিন্দীয়া ১/৯৬, ক্বাযীখান ১/১

ক্রয়-বিক্রয় প্রসঙ্গে - পুরো অধ্যায়

প্রশ্ন আছে ৯ টি - দলিল সহ ০১ প্রশ্ন: কিস্তিতে বেশি দামে পন্য বিক্রি করার বিধান ? উত্তর: কিস্তিতে বেশি দামে পন্য বিক্রিওয় জায়েজ। যেমন আমাদের দেশে প্রচলিত ফ্রিজ, ফার্নিচার, ফ্ল্যাট ইত্যাদি দুই পদ্ধতিতে বিক্রি করা হয়। নগদ দাম দিয়ে কিনলে কম মূল্য আর কিস্তিতে কিনলে  বেশি মূল্য। ফুকাহায়ে কেরাম এ পদ্ধতিকে বৈধ ঘোষনা করেছেন। যেহেতু এখানে সুদের সম্ভাবনা নেই। কেননা পন্য এবং মূল্য একই জিনিসের নাহলে বাকিতে বা বাকিতে বিক্রি করা জায়েজ। তাই এ  জাতীয় ক্রয় বিক্রয় জায়েজ। (হেদায় ৩/৭৯, আলমগীরী ৩/১৩৬, ইমদাদুল ফাতাওয়া ৩/৪০) ০২ প্রশ্ন: মানুষের রক্ত, চুল, নখ ইত্যাদি বিক্রি করার বিধান ? উত্তর: মানুষের রক্ত, চুল, নখ ইত্যাদি বিক্রি করা হারাম। কেননা মানষের প্রত্যেকটি অঙ্গকে আল্লাহ তাআলা মর্যাদা দিয়েছেন, তাই সমস্ত মানুষের কোনো অঙ্গ বিক্রিকে ফুকাহায়ে কেরাম নাজায়েজ ঘোষনা করেছেন। আমাদের দেশে ব্যাপকভাবে মানুষের নখ, চুল, রক্ত ইত্যাদি বিক্রি হচ্ছে, যা সম্পূর্ন নাজায়েজ। তবে কঠিন বিপদের মূহুর্তে রক্ত পাওয়া নাগেলে, রক্ত কিনার অনুমতি বয়েছে, কিন্তু বিক্রি সর্বাবস্থেয় নাজায়েজ। আওর স্বাধীন মানুষ বা তার কোন অঙ্গ বিক