Skip to main content

আযান প্রসঙ্গে - পুরো অধ্যায়

প্রশ্ন আছে ৬ টি - দলিল সহ


০১ প্রশ্ন: আমাদের মসজিদে দুই ব্যক্তির মাঝে জুমার দ্বিতীয় আযান কোথায় দাড়িয়ে দিবে তা নিয়ে মতানৈক্য সৃষ্টি হয়। একজন বলেন ইমাম সাহেবের সামনে দাড়িয়ে দিবে আরেকজন বলেন ইমাম সাহেবের সামনে না দিয়ে মসজিদের বাহিরে দাড়িয়ে দিবে এক্ষেত্রে সঠিক মাসয়ালা কি জানালে উপকৃত হব ?

উত্তর: প্রশ্নে উল্লিখিত অবস্থায় সঠিক মাসয়ালা হল জুমার দ্বিতীয় আজান ইমামের সামনে দাড়িয়ে দিবে। মসজিদের বাহিয়ে নয়। (শামী ৩/৩৮, হিন্দীয়া ১/২১০, বাহরুর রায়েক ২/২৭৪)

০২ প্রশ্ন: আযানের দোয়ার শেষে انك لاتخلف الميعاد পড়ার হুকুম কি ? দলিলের আলোকে বিস্তারিত জানালে কৃতঙ্গ থাকব।

উত্তর: আযানের দোয়ার শেষে انك لاتخلف الميعاد  পড়া হাদীস দ্বারা প্রমাণিত সুতরাং তা পড়া সুন্নাত। (হিন্দীয়া ১/৭৮, ফাতহুল বাড়ি ২/২৩১)   

০৩ প্রশ্ন: আযানের পর পর হাত উঠিয়ে দোয়া করার বিধান কি ?

উত্তর: এ সময় হাত উঠিয়ে দোয়া করা হাদিস দ্বারা প্রমাণিত নয়। সুতরাং হাত না উঠিয়ে দোয়া করা উত্তম। (মেশকাতুল মাসাবিহ ১৯৬, ফাতহুল বাড়ী ২/১৬৭, ফাতুয়ায়ে মুহাম্মাদিয়া ৯/১৩৮)

০৪ প্রশ্ন: আযান দেওয়ার হুকুম কি ? আদান ছাড়া মসজিদ কিংবা মসজিদের বাহিরে জামাতে নামাজ পড়ার বিধান কি ?

উত্তর: আযান দেওয়া সুন্নাতে মুয়াক্কাদা, মসজিদে আযান দেওয়া ছাড়া জামাতে নামাজ আদায় করা মাকরুহ । তবে মসজিদ ছাড়া অন্যত্রে যেমনঃ বাড়ি কিংবা মাঠে, জমিন, ক্ষেত কিংবা বাগানে আজান দেওয়া ছাড়া নামাজ আদায় করলে মাকরুহ হবেনা। কেননা মহল্লার বা শহরের আযান তাদের জন্য যথেষ্ট। তবে আজান দিয়ে নামাজ পড়া ভাল। 
(ফাতহুল কাদীর ১/২৬১-২৬২, কাযীখান ১/৫১, মাহমুদিয়া ৯/১০৮)

০৫ প্রশ্ন:  আমাদের মাদ্রাসার মহল্লায় অনেক মসজিদ । সামান্য সময়ের ব্যবধানে অনেক গুলো আযান কানে আসে । অনেক সময় নিজেদের মসজিদের আযানের আগে ও অন্য মসজিদের আযান কানে আসে । এক্ষেত্রে কোন মসজিদের আযানের জাওয়াব দিতে হবে ? যেটি প্রথমে শুনেছি তার নাকি নিজেদের মসজিদের ? চাই তা আগে হোক বা পরে হোক।

উত্তর:  সামান্য সময়ের ব্যবধানে যদি  অনেক গুলো আযান কানে আসে, তাহলে প্রথমে শোনা আযানের উত্তর দিতে হবে। আর যদি একই সময়ে বিভিন্ন মসজিদের আযান কানে আসে তাহলে সে যে মহল্লায় রয়েছে সে মহল্লার আযানের উত্তর দিতে হবে। 
(শামী ১/৩৯৭, বাহরুররায়েক ১/৪৫২, ফাতহুল কাদীর ১/২৫৪)

০৬ প্রশ্ন: আমাদের দেশে বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায় যে অনেক মসজিদে নাবালেগ ছেলেরা আজান দিয়ে থাকে, জানার বিষয় হল নাবালেগ আদান দিলে তা সহীহ হবে কিনা ? নাকি পুনরায় তা দিতে হবে ?

উত্তর: বুঝমান নাবালেগের আদান সহীহ, পুনরায় আজান দিতে হবে না, অবুঝ নাবালেগের আদান সহীহ নয় এবং পুনরায় আদান দেওয়া আবশ্যক, তবে বালেগের আদান দেওয়াটাই উত্তম।
(শামী ২/৬১, তাতারখানীয়া ২/১৪৫, সিরাজীয়া ৫৪, বাদায়াউসসানায়া ১/৩৭২)



Comments

Popular posts from this blog

নামাজ প্রসঙ্গে - পুরো অধ্যায়

প্রশ্ন আছে ৯৬ টি - দলিল সহ  ০১ প্রশ্ন: সেজদার জায়গায় ধুলা-বালি থাকলে নামাজের মধ্যে ফুঁ’দিয়ে তা দূর করা শরীয়তের দৃষ্টিতে কেমন?  উত্তর: সেজদার জায়গায় ধুলাবালি থাকলে যদি তা ফুঁ দিয়ে দূর করার কারণে আওয়াজ সৃষ্টি হয় তাহলে নামাজ-নষ্ট হয়ে জাবে,অন্যথায় নামাজ নষ্ট হবে না,তবে-ইচ্ছাকৃত এরূপ করা মাকরূহ।আর যদি সেজদার জায়গায় কষ্টদায়ক কোন কিছু থাকে যার কারণে সেজদা করতে অক্ষম হয় তখন তা হাত দিয়ে সরিয়ে দিবে। (হিন্দীয়া ১/১৫৯, ক্বাযীখান ১/৭৪) ০২ প্রশ্ন: মহিলারা বৈঠকের সময় কিভাবে বসবে, পুরুষদের মতই-নাকি তাদের থেকে ভিন্ন কোন পদ্ধতিতে ? উত্তর: মহিলারা বৈঠকের সময় পুরুষদের মত বসবেনা,বরং সে তার বাম নিতম্বের উপর বসবে এবং তার উভয়-পা ডান দিকে বের করে দিবে। ( হিন্দীয়া ১/১৩৩, রাহিমীয়া ৫/৭৫) ০৩ প্রশ্ন:নামাজে কেউ দুইবার সূ্রা ফাতেহা পড়ে ফেলে তাহলে তার উপর সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে কি না? উত্তর: কোন ব্যক্তি যদি ফরজ নামাজের প্রথম দুই রাকাআতে ও ওয়াজিব, সুন্নাত ও নফল নামাজের প্রত্যেক রাকাআতে সূ্রা মিলানোর পূর্বে দুইবার সূ্রা ফাতেহা পড়ে তাহলে তার উপর সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে।আর যদি সূ্রা মিলানোর পর...

ক্রয়-বিক্রয় প্রসঙ্গে - পুরো অধ্যায়

প্রশ্ন আছে ৯ টি - দলিল সহ ০১ প্রশ্ন: কিস্তিতে বেশি দামে পন্য বিক্রি করার বিধান ? উত্তর: কিস্তিতে বেশি দামে পন্য বিক্রিওয় জায়েজ। যেমন আমাদের দেশে প্রচলিত ফ্রিজ, ফার্নিচার, ফ্ল্যাট ইত্যাদি দুই পদ্ধতিতে বিক্রি করা হয়। নগদ দাম দিয়ে কিনলে কম মূল্য আর কিস্তিতে কিনলে  বেশি মূল্য। ফুকাহায়ে কেরাম এ পদ্ধতিকে বৈধ ঘোষনা করেছেন। যেহেতু এখানে সুদের সম্ভাবনা নেই। কেননা পন্য এবং মূল্য একই জিনিসের নাহলে বাকিতে বা বাকিতে বিক্রি করা জায়েজ। তাই এ  জাতীয় ক্রয় বিক্রয় জায়েজ। (হেদায় ৩/৭৯, আলমগীরী ৩/১৩৬, ইমদাদুল ফাতাওয়া ৩/৪০) ০২ প্রশ্ন: মানুষের রক্ত, চুল, নখ ইত্যাদি বিক্রি করার বিধান ? উত্তর: মানুষের রক্ত, চুল, নখ ইত্যাদি বিক্রি করা হারাম। কেননা মানষের প্রত্যেকটি অঙ্গকে আল্লাহ তাআলা মর্যাদা দিয়েছেন, তাই সমস্ত মানুষের কোনো অঙ্গ বিক্রিকে ফুকাহায়ে কেরাম নাজায়েজ ঘোষনা করেছেন। আমাদের দেশে ব্যাপকভাবে মানুষের নখ, চুল, রক্ত ইত্যাদি বিক্রি হচ্ছে, যা সম্পূর্ন নাজায়েজ। তবে কঠিন বিপদের মূহুর্তে রক্ত পাওয়া নাগেলে, রক্ত কিনার অনুমতি বয়েছে, কিন্তু বিক্রি সর্বাবস্থেয় নাজায়েজ। আওর স্বাধীন মানুষ বা তা...

পবিত্রতা প্রসঙ্গে - পুরো অধ্যায়

প্রশ্ন আছে ৪৮ টি - দলিল সহ ০১ প্রশ্ন: ফরয গোসলে নাকে পানি দেওয়ার বিধান কি ? উত্তর: ফরয গোসলে নাকে পানি দেওয়া ফরয।   (শামী ১/৩১১, বাদায়েউসসনায়ে ১/১৪২, হাক্কানীয়া ২/৫২১) ০২ প্রশ্ন: অনেকে বলে থাকেন, অজু করে কাপড় দিয়ে হাত মুখ মোছা উচিৎ নয়, এতে সওয়াব কমে যায়, কথাটি কি সঠিক ? অজুর পর হাতমুখ মোছার বিধান কি ? জানালে কৃতঙ্গ থাকব।  উত্তর: অজুর পর কাপড় দিয়ে হাত মুখ মোছাতে কোন সমস্যা নেই, বরং কেউ কেউ একে অজুর আদব এবং মুস্তাহাব হিসেবে উল্লেখ করেছেন, সুতরাং যারা বলে যে অজু করে কাপড় দিয়ে হাত মুখ মোছা উচিৎ নয়। এতে সওয়াব কমে যায় তাদের এ কথা সঠিক নয়।  (শামী ১/২৭৯, হিন্দীয়া ১/৬৫, দারুল উলুম ১/১৩১ ) ০৩ প্রশ্ন: আমি মেহেদী পাতা বেটে হাতে দেই পরবর্তিতে আমার মেয়ে জানায় মেহেদীর মধ্যে নাপাক পানি পড়ে তা নাপাক হয়ে গেছে, এখন আমার জানার বিষয় হল নাপাক মেহেদী দ্বারা হাত রঙ্গিন করার পর হাত পবিত্র করার পদ্ধতি কি। উত্তর: নাপাক মেহেদী দ্বারা হাত রঙ্গিন করার পর পরিষ্কার পানি বের হওয়া পর্যন্ত হাত ধৌত করলে হাত পবিত্র হয়ে যায়। যদিও রং বাকি থাকে। (শামী ১/৫৯০,  হিন্...