Skip to main content

তালাক প্রসঙ্গে - পুরো অধ্যায়

প্রশ্ন আছে ৩ টি - দলিল সহ


০১ প্রশ্ন: স্ত্রী কর্ত্রৃক স্বামীকে দিভোর্স দেয়ার শরঈ বিধান ?

উত্তর: ইসলামে তালাকের অধিকার শুধু স্বামীকেই দিয়েছে, স্ত্রীকে তালাকের অধিকার দেয়া হয়নি। তবে যদি স্বামী তার স্ত্রীকে তালাক দেয়ার অধিকার দেয় তাহলে স্ত্রী শর্ত সাপেক্ষে তালাক গ্রহন করতে পারবে। কিন্তু স্ত্রী তালাক দিলে, তার তালাক গ্রহন এক্সোগ্য হবে না। সুতরাং স্বামী যদি বিবাহের পর, অথবা বিবাহের মজলিসে কিংবা তারো পূর্বে বিবাহের দিকে নিসবত করে স্ত্রীকে তালাক গ্রহনের অধিকার দেয়, তাহলে স্ত্রী শুধু ঐ শর্তগুলো পেলে তালাক গ্রহন করতে পারবে, যে শর্তগুলো তালাক গ্রহনের অধিকার দানের মজলিসে দিয়েছিল। প্রকাশ থাকে যেম অনেক সময় কাজী সাহেব কাবিননামার মধ্যে স্বামীর অজান্তেই নিজ থেকে কিছু শর্ত লিখে ডিভোর্স প্রধানের অধিকার কথা লিখে দেয়, তাদের লেখা ঐ শর্তের কোনো ধর্তব্য নেই। আর অধিকারের তো কোনো প্রশ্নি আসে না। কারন শর্ত এবং অধিকার দেয়ার মালিক একমাত্র স্বামী। তবে কাজী স্বামীর অনুমতিক্রমে যদি তাকে জানিয়ে শর্ত এবং অধিকারের কথা লিখে তাহলে তা গ্রহনযোগ্য হবে। বর্ত্মান সমাজে দিভোর্সের ব্যাপক প্রচলন, মহিলারা স্বামীর সাথে ঝগড়া হলে বা অন্য কোন পুরুষের সাথে প্রেম ভালবাসা করে স্বামীকে দিচোর্স বা তালাক দিয়ে অন্যের সাথে বিবাহ বসে জীবন যাপন শুরু করে দেয়। শর্ত ছাড়া নিজের মঙ্গড়া ডিভোর্সের কোন ধর্তব্য শরিয়তে নেই। ফলেডিভোর্স দেয়া সত্ত্বেত্ত সে আগের স্বামীর স্ত্রী বলে বিবেচিত হবে। সুতরাং তার জন্য অনত্র বিবাহ বসা হারাম,  এমনিভাবে শর্ত পাওয়া গেলেও ডিভোর্সের পর শরঈ ইদ্দত পালন ব্যতীত অন্যত্র বিবাহ বসা হারাম। কিন্তু অধিকাংশ মহিলা শরীয়তের এই জরুরি বিধানকে কোনো ভ্রুক্ষেপই করে না। যার ফলে মরন পর্যন্ত হাওরাম যিনায় লিপ্ত থাকছে। এবং সে সময় গর্ভে আসা সকল সন্তান অবৈধ হচ্ছে। অতত্রব প্রতিটি মুসলমানের জন্য এ জাতীয় পরিস্থিতিতে কোন অভিজ্ঞ মুফতী সাহেবের পরামর্শ গ্রহন করা জরুরি। নতুবা না-জানার কাওরনে দুনিয়া ও আখেরাত উভয়টিই বরবাদ হয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। (আলমগীরী ১/৪১৫, কাযীখান ১/৫০৪, শামী ৪/৫৭৫, দারুল উলূম ৯/৪৬)

০২ প্রশ্ন: আমি মোঃ শাহজালাল পিতা মোঃ ইস্মাইল হোসেন আমার পরিবারে আমি আমার স্ত্রীর সাথে একটি বিষয় নিয়ে ঝগড়ায় লিপ্ত হই, ঝগড়ার এক পর্যায়ে আমি খুব রাগান্বিত হয়ে যাই। রাগান্বিত হয়ে আমি আমার স্ত্রীকে এক তালাক এবং পরে আরেক তালাক মোট দুই তালাক দিয়ে ফেলি। এ অবস্থায় আমি পুনরায় আমার স্নগ সার ঠিক রাখতে চাই এক্ষেত্রে শরীয়তের সমাধান কি ?

উত্তর: আপনার স্ত্রীর উপর দুই তালাকে রেজয়ী পতিত হয়েছে । এখন আপনি পুনরায় সংসার করতে চাইলে রজয়াত তোলাক পেত্যাহার করতে হবে । রজআতের পদ্ধতি হল , ইদ্দতের মধ্যে স্ত্রীকে একথা বলা যে, আমি তোমাকে ফিরিয়ে নিলাম অথবা কামভাবের সাথে স্ত্রীকে চুমু দেয়া বা স্পর্শ করা, তবে তালাক পেত্যাহারের পর আপনি আর মাত্র একটি তালাকের মালিক থাকবেন। 
(বুখারী ২/৮০৩, শামী ৪/৪৬৪, হিন্দীয়া ১/৪২৩)

০৩ প্রশ্ন: আমি আমার স্ত্রীকে বলেছি, আল্লাহর কসম আমি আর তোকে সংসারে রাখুম না । এমর্মে আমার জানার বিষয় হল , এই কথা বলার দ্বারা তালাক পতিত হয়েছে কি না ?

উত্তর: না, আপনার উক্ত কথা দ্বারা আপনার স্ত্রীর উপর তালাক পতিত হয়নি। 

(হিন্দীয়া ১/৪৫২, বাজ্জাজিয়া ১/১১৫, ফাতহুল কাদীর ৪/৮)


Comments

Popular posts from this blog

নামাজ প্রসঙ্গে - পুরো অধ্যায়

প্রশ্ন আছে ৯৬ টি - দলিল সহ  ০১ প্রশ্ন: সেজদার জায়গায় ধুলা-বালি থাকলে নামাজের মধ্যে ফুঁ’দিয়ে তা দূর করা শরীয়তের দৃষ্টিতে কেমন?  উত্তর: সেজদার জায়গায় ধুলাবালি থাকলে যদি তা ফুঁ দিয়ে দূর করার কারণে আওয়াজ সৃষ্টি হয় তাহলে নামাজ-নষ্ট হয়ে জাবে,অন্যথায় নামাজ নষ্ট হবে না,তবে-ইচ্ছাকৃত এরূপ করা মাকরূহ।আর যদি সেজদার জায়গায় কষ্টদায়ক কোন কিছু থাকে যার কারণে সেজদা করতে অক্ষম হয় তখন তা হাত দিয়ে সরিয়ে দিবে। (হিন্দীয়া ১/১৫৯, ক্বাযীখান ১/৭৪) ০২ প্রশ্ন: মহিলারা বৈঠকের সময় কিভাবে বসবে, পুরুষদের মতই-নাকি তাদের থেকে ভিন্ন কোন পদ্ধতিতে ? উত্তর: মহিলারা বৈঠকের সময় পুরুষদের মত বসবেনা,বরং সে তার বাম নিতম্বের উপর বসবে এবং তার উভয়-পা ডান দিকে বের করে দিবে। ( হিন্দীয়া ১/১৩৩, রাহিমীয়া ৫/৭৫) ০৩ প্রশ্ন:নামাজে কেউ দুইবার সূ্রা ফাতেহা পড়ে ফেলে তাহলে তার উপর সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে কি না? উত্তর: কোন ব্যক্তি যদি ফরজ নামাজের প্রথম দুই রাকাআতে ও ওয়াজিব, সুন্নাত ও নফল নামাজের প্রত্যেক রাকাআতে সূ্রা মিলানোর পূর্বে দুইবার সূ্রা ফাতেহা পড়ে তাহলে তার উপর সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে।আর যদি সূ্রা মিলানোর পরে দ্বিতীয়বার প

পবিত্রতা প্রসঙ্গে - পুরো অধ্যায়

প্রশ্ন আছে ৪৮ টি - দলিল সহ ০১ প্রশ্ন: ফরয গোসলে নাকে পানি দেওয়ার বিধান কি ? উত্তর: ফরয গোসলে নাকে পানি দেওয়া ফরয।   (শামী ১/৩১১, বাদায়েউসসনায়ে ১/১৪২, হাক্কানীয়া ২/৫২১) ০২ প্রশ্ন: অনেকে বলে থাকেন, অজু করে কাপড় দিয়ে হাত মুখ মোছা উচিৎ নয়, এতে সওয়াব কমে যায়, কথাটি কি সঠিক ? অজুর পর হাতমুখ মোছার বিধান কি ? জানালে কৃতঙ্গ থাকব।  উত্তর: অজুর পর কাপড় দিয়ে হাত মুখ মোছাতে কোন সমস্যা নেই, বরং কেউ কেউ একে অজুর আদব এবং মুস্তাহাব হিসেবে উল্লেখ করেছেন, সুতরাং যারা বলে যে অজু করে কাপড় দিয়ে হাত মুখ মোছা উচিৎ নয়। এতে সওয়াব কমে যায় তাদের এ কথা সঠিক নয়।  (শামী ১/২৭৯, হিন্দীয়া ১/৬৫, দারুল উলুম ১/১৩১ ) ০৩ প্রশ্ন: আমি মেহেদী পাতা বেটে হাতে দেই পরবর্তিতে আমার মেয়ে জানায় মেহেদীর মধ্যে নাপাক পানি পড়ে তা নাপাক হয়ে গেছে, এখন আমার জানার বিষয় হল নাপাক মেহেদী দ্বারা হাত রঙ্গিন করার পর হাত পবিত্র করার পদ্ধতি কি। উত্তর: নাপাক মেহেদী দ্বারা হাত রঙ্গিন করার পর পরিষ্কার পানি বের হওয়া পর্যন্ত হাত ধৌত করলে হাত পবিত্র হয়ে যায়। যদিও রং বাকি থাকে। (শামী ১/৫৯০,  হিন্দীয়া ১/৯৬, ক্বাযীখান ১/১

ক্রয়-বিক্রয় প্রসঙ্গে - পুরো অধ্যায়

প্রশ্ন আছে ৯ টি - দলিল সহ ০১ প্রশ্ন: কিস্তিতে বেশি দামে পন্য বিক্রি করার বিধান ? উত্তর: কিস্তিতে বেশি দামে পন্য বিক্রিওয় জায়েজ। যেমন আমাদের দেশে প্রচলিত ফ্রিজ, ফার্নিচার, ফ্ল্যাট ইত্যাদি দুই পদ্ধতিতে বিক্রি করা হয়। নগদ দাম দিয়ে কিনলে কম মূল্য আর কিস্তিতে কিনলে  বেশি মূল্য। ফুকাহায়ে কেরাম এ পদ্ধতিকে বৈধ ঘোষনা করেছেন। যেহেতু এখানে সুদের সম্ভাবনা নেই। কেননা পন্য এবং মূল্য একই জিনিসের নাহলে বাকিতে বা বাকিতে বিক্রি করা জায়েজ। তাই এ  জাতীয় ক্রয় বিক্রয় জায়েজ। (হেদায় ৩/৭৯, আলমগীরী ৩/১৩৬, ইমদাদুল ফাতাওয়া ৩/৪০) ০২ প্রশ্ন: মানুষের রক্ত, চুল, নখ ইত্যাদি বিক্রি করার বিধান ? উত্তর: মানুষের রক্ত, চুল, নখ ইত্যাদি বিক্রি করা হারাম। কেননা মানষের প্রত্যেকটি অঙ্গকে আল্লাহ তাআলা মর্যাদা দিয়েছেন, তাই সমস্ত মানুষের কোনো অঙ্গ বিক্রিকে ফুকাহায়ে কেরাম নাজায়েজ ঘোষনা করেছেন। আমাদের দেশে ব্যাপকভাবে মানুষের নখ, চুল, রক্ত ইত্যাদি বিক্রি হচ্ছে, যা সম্পূর্ন নাজায়েজ। তবে কঠিন বিপদের মূহুর্তে রক্ত পাওয়া নাগেলে, রক্ত কিনার অনুমতি বয়েছে, কিন্তু বিক্রি সর্বাবস্থেয় নাজায়েজ। আওর স্বাধীন মানুষ বা তার কোন অঙ্গ বিক